তিনদিন ধরে বঙ্গোপসাগরে ভাসছে ১৭ জেলে

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি:মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ১০:৫৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৩

বঙ্গোপসাগরের মান্দারবাড়িয়ায় ‘এফবি মা’ নামে একটি মৎস্য ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে ১৭ জেলে তিনদিন ধরে ভাসছে।

উপকূলের জেলে মহাজন গোলাম মোস্তফা চৌধুরী জানান, বরগুনা জেলার পাথরঘাটার বাদুরতলা গ্রামের ছালাম দোকানদারের মালিকানাধীন ‘এফবি মা’ ট্রলারটি ১৭ জন জেলে নিয়ে গত ১০সেপ্টেম্বর মাছ ধরার জন্য পাথরঘাটা থেকে সাগরে যাত্রা করে যায়। ছেড়ে যাবার দুইদিন পরে ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে বঙ্গোপসাগরের মান্দারবাড়িয়া এলাকায় ভাসমান অবস্থায় রয়েছে। ট্রলারের মাঝি জামাল মিয়া বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মোবাইল করে এই তথ্য জানায়।

সাগরের অধিকাংশ স্থানে মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় তারা এই কয়দিনের মধ্যে শুধু এই কথাটুকু মাঝি জানাতে পেরেছে। ট্রলারে থাকা ১৭ জন জেলের বাড়ী বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।

এবিষয়ে পাথরঘাটা কোস্টগার্ড স্টেশন কন্টিনজেন্ট কমান্ডার মাসুদুর রহমান মোড়ল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমরা তথ্য পেয়েছি এবং তাদের উদ্ধারের জন্য মোংলা কোস্টগার্ডের সদস্যরা কাজ শুরু করেছে। বঙ্গোপসাগরের যে এলাকায় এই ট্রলারটি বিকল হয়েছে সেই এলাকা বাগেরহাট জেলার অন্তরগত তাই মোংলা কোস্টগার্ড স্টেশন তাদের সন্ধান শুরু করেছে এবং একাধিক টিম কাজ করছে।

এদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুস্পষ্ট লঘুচাপের কারণে মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৩নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। এর ফলে সাগর প্রচন্ড উত্তাল রয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় মাছ ধরতে পারছেনা জেলেরা। এমতাবস্থায় জানমালের ক্ষতি এড়াতে জেলেরা সুন্দরবন উপকূলে আশ্রয় নিয়েছেন।

চলতি ইলিশ আহরণ মৌসুমের শেষ ভাগে এসে জেলেদের জালে প্রচুর ইলিশ পড়তে শুরু করলে এ দুর্যোগে তা বন্ধ হয়ে গেছে। লঘুচাপের কারণে বুধবার সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টিপাত ও হালকা-মাঝারি ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে মোংলাসহ সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে। এতে এক প্রকার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিবার করছে পুরো উপকূল জুড়ে।

Nagad

এদিকে সাগরের ৬৫দিনের মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা শেষে ১লা সেপ্টেম্বর থেকে জেলেরা সাগরে নামলেও তাতে এখন বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আকস্মিক এ লঘুচাপ। লঘুচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল হওয়াতে সুন্দরবনের দুবলার চর, আলোরকোল, নারকেলবাড়ীয়া ও ভেদাখালীসহ বিভিন্ন খালে অবস্থান করছে শতশত ট্রলারের হাজার হাজার জেলে-মাঝিমাল্লারা।

বাগেরহাটের শরণখোলার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মৎস্য আড়ৎদার মোঃ কবির হাওলাদার বলেন, একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অপরদিকে সাগর ও সুন্দরবনে দফায় দফায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞায় আমরা জেলেরা এখন একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছি। আর দুর্যোগ তো আমাদের পিছনে লেগেই আছে। যখনই ইলিশ পড়া শুরু করে, তখনই দুর্যোগ হানা দেয়। দুর্যোগের কারণে আমার আড়ৎতে এফ,বি খায়রুল ইসলাম, এফ,বি মা-বাবার দোয়া, এফ, বি পূর্ণিমা, এফ,বি মায়ের দোয়া, এফ,বি জিসানসহ পাঁচটি ট্রলার মালিক চলতি ইলিশ আহরণ মৌসুমে কম হলেও ৫০লাখ টাকা লোকসান দিয়েছেন। ইলিশ মৌসুমও প্রায় শেষ পর্যায়ে, তারমধ্যে আবার দুর্যোগ হানা দিয়েছে। তাই এ বছর আর লোকসান কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে না।

সারাদিন. ১৫ সেপ্টেম্বর. আরএ