গ্রেপ্তারের পর থেকেই কান্নাকাটি করছেন পলক, দিচ্ছেন চাঞ্চল্যকর তথ্য

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২৪

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পাঁচজন ভিআইপি আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু এবং সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রাজধানীর নিউমার্কেট ও পল্টন থানার পৃথক দুটি হত্যা মামলায় তাদের গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়। এদিকে রিমান্ডে নেওয়ার পর থেকে ভিআইপি আসামিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়েছেন সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

গ্রেপ্তারের পর থেকেই বেশিরভাগ সময় কান্নাকাটি করছেন। তবে তিনি এত দ্রুত সরকারের পতন হতে পারে, তা কল্পনাও করতে পারেননি। যদিও একদিন আগে স্ত্রী-সন্তানদের বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। তার ভাষ্য, চাইলে তিনিও দেশ ছেড়ে পালাতে পারতেন। তবে শেখ হাসিনার সঙ্গে ‘বেঈমানি করা হবে’ বলে তিনি যাননি।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এসব তথ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছে।

জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতরা দেশের বড় বড় দুর্নীতির জন্য শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠজনদের দায়ী করছেন। অনেক কর্তাব্যক্তি আবার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের কথা বলে নিজেরাই বাগিয়ে নিতেন বড় বড় কাজ।

সূত্র বলছে, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির বিষয়ে সালমান এফ রহমান এখনও মুখ খোলেননি। তবে, মোহাম্মদ আলী আরাফাত নির্বাচনের বিষয়ে যাবতীয় নীলনকশা করেছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। কেবল নির্বাচনের জন্যই তারা কয়েকজন শত কোটি টাকা নিজেদের পকেটে ভরেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে সালমান আরও জানান, জ্বালানি সেক্টরের সবকিছুই নিজে ডিজাইন করতেন সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। একইসঙ্গে বাপেক্সকে দেশের কল্যাণের বাইরে নিজের কল্যাণে ব্যবহার করতেন তিনি।

Nagad

এদিকে, সরকারের নির্দেশেই অপরাধে জড়িয়েছেন বলে জানান জুনায়েদ আহমেদ পলক। ইন্টারনেট শাটডাউনের বিষয়েও দায় অস্বীকার করেছেন। তার ভাষ্য, ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে তার একক কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের নির্দেশনা মেনে তিনি ইন্টারনেট শাটডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এছাড়া ইন্টারনেট শাটডাউনের ক্ষেত্রে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সায় ছিল।

ছাত্র ও সাধারণ মানুষের আন্দোলনের চাপের মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যান তিনি।

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর প্রায় ২৪ ঘণ্টা জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার একটি কক্ষে আত্মগোপনে ছিলেন পলক।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দিন (৬ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত পলক ওই এলাকাতেই ছিলেন। এরপর তিনি বিশেষ উপায় অবলম্বন করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে যান। কিন্তু সেখান থেকে তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী।

উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর পল্টন থানা এলাকায় গুলিতে নিহত হন রিকশাচালক কামাল মিয়া (৩৯)। ওই ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের আসামি করে ২০ জুলাই একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন। ওই মামলায় গত ১৪ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয় শামসুল হক টুকু, জুনাইদ আহমেদ পলক ও ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে।