বিভিন্ন অভিযোগে উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগ দাবি ইশরাকের

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ২:৪০ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২৫

আদালতের রায়ের পর নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করলেও মেয়র হিসেবে শপথ গ্রহণে বাধা দেওয়ায় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে দায়ী করেছেন ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। একই সঙ্গে উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ভ্রান্ত তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ এনে তরুণ এই উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছেন, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানান তিনি।

ইশরাক বলেন, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বয়সে তরুণ। তার সামনে জীবনের অনেক পথ। তাই তাকে জনগণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শন তার নৈতিক দায়িত্ব। জনগণকে বিভ্রান্ত করা তার কাজ নয়। তিনি অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন। এমন কাজের কারণে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা পদে সজীব ভূইয়া বহাল থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। শপথ ভঙ্গের জন্য আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল মামলাঃ নং ১৫/২০২০-এ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী হিসেবে আমাকে ঘোষণা করে। ১০ দিনের মধ্যে আমাকে মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করার নির্দেশ দেয়। নির্বাচন কমিশন সেই নির্দেশনা মেনে ২৭ এপ্রিল সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করে। সংশোধিত গেজেট পেয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন ছাড়া আর কিছু করতে পারেন না। কিন্তু শপথ অনুষ্ঠানকে বিলম্ব করার জন্য বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশন অনুষ্ঠান থেকে বিরত থাকে। এতে শপথ অনুষ্ঠান আর বিলম্বিত হয়।

ইশরাক বলেন, ১৬ জুন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, গেজেটের মেয়াদ শেষ হওয়ায় শপথ দেওয়া যায়নি। যদি এ কথা সত্য হয়, তাহলে ভবিষ্যতে কোন নির্বাচিত প্রতিনিধিই শপথ নিতে পারবে না। অর্থাৎ, বিজয়ীর নামে গেজেট প্রকাশিত হলে পরাজিত প্রার্থী অথবা অন্য কেউ শপথ বন্ধের জন্য রিট মামলা দায়ের করতে পারবে। আর মামলা ৩০ দিন নিষ্পন্ন না হলে গেজেটের ৩০ দিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। ফলে জনপ্রতিনিধিরা শপথ গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হবেন।

তিনি দাবি করেন, আসিফ মাহমুদ রাজনৈতিক ও আর্থিকভাবে অন্যায়ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য তার পছন্দের একজনকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে সুবিধা নিচ্ছেন। এতে দেশের জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রের অবমূল্যায়ন ঘটেছে। তিনি জনগণকে বিভ্রান্ত করে প্রতারণায় লিপ্ত হয়েছেন।

Nagad

ইশরাক উল্লেখ করেন, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু আসলে সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন দপ্তরে জরুরি সেবা নিয়মিত চলমান রয়েছে।

তিনি বিস্তারিতভাবে বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন ওয়ার্ড সচিব থাকে, যারা জন্ম-মৃত্যু সনদ, নাগরিক সনদ, ওয়ারিশি সনদের কাজ করেন। ১ থেকে ৬ বছর বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়া ইপিআই বিভাগ করে থাকে। প্রতিটি ওয়ার্ডে টিকা খাওয়ানোর জন্য ঔষধ ও অফিস আছে। মশক নিধনের জন্য স্প্রে মেশিন ও ফগার মেশিন রয়েছে। ভান্ডার বিভাগ থেকে ইনসেক্টিসাইড ও লারভিসাইড এনে স্প্রে ও ফগিং করা হয়। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। বর্জ্য অপসারণের ক্ষেত্রে জরুরি কাজে ব্যাঘাত হলে ১২ ঘণ্টার মধ্যে শহরের কোরবানীর বর্জ্য অপসারণ সম্ভব হত না।

ইশরাক দাবি করেছেন, আসিফ মাহমুদ ও তার পক্ষে যারা এই গেজেট বিলম্ব ও শপথ বাধার পেছনে কাজ করছেন, তারা জনগণের ম্যান্ডেটের অবজ্ঞা করেছেন এবং গণতন্ত্রকে অবহেলা করছেন। এজন্য তিনি স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার পদ থেকে অবিলম্বে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।