অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে ইরান, ব্যর্থ থাড-আয়রন ডোমসহ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সামরিক কৌশলে বড় পরিবর্তন এনেছে ইরান। দেশটির সেনাবাহিনীর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা দাবি করেছেন, এখন আর আগের মতো বড় সংখ্যায় ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হচ্ছে না; বরং অল্পসংখ্যক হলেও উন্নত প্রযুক্তির এবং নির্ভুল লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সক্ষমতা সম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে জোর দিচ্ছে ইরান।
শনিবার (২২ জুন) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই ইরানি কর্মকর্তা বলেন, “আমরা এমন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছি, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘থাড’, ‘প্যাট্রিয়ট’, ‘অ্যারো-২’, ‘অ্যারো-৩’, ‘ডেভিড’স স্লিং’ এবং ইসরায়েলের ‘আয়রন ডোম’সহ সব ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।” তবে তিনি নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্যবস্তুর নাম প্রকাশ করেননি।


ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ইরান বর্তমানে এমন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে, যেগুলো ক্লাস্টার বোমা বহন করতে সক্ষম। এই ক্ষেপণাস্ত্রের ওয়ারহেড নির্ধারিত উচ্চতায় (প্রায় ৭ কিলোমিটার) পৌঁছে কমপক্ষে ২০টি ছোট বিস্ফোরক অংশে বিভক্ত হয় এবং প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকার ওপর আঘাত হানে।
ইসরায়েল দাবি করেছিল, তাদের বিমান হামলায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকারী যন্ত্রের অর্ধেকের বেশি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং এর ফলে ইরানের সক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। তবে ইরানি ওই কর্মকর্তা এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা কমেছে বলে খুশি না হয়ে ইসরায়েলের উচিত নতুন শক্তির ভারসাম্য বুঝে কৌশল নির্ধারণ করা।”
এদিকে ইরানে ইসরায়েলি হামলায় হতাহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৪৩০ জন নিহত এবং ৩,৫০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
এর আগে দেওয়া তথ্যে ইরান জানিয়েছিল, হতাহতের সংখ্যা ২২৪। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো দাবি করেছে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি। হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট নিউজ এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, এই সংখ্যা ৬৫৭ জন পর্যন্ত হতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান ও ইসরায়েলের এই সামরিক পাল্টাপাল্টি আক্রমণ মধ্যপ্রাচ্যে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। এতে শুধু এই অঞ্চল নয়, গোটা বিশ্বকেই এর ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে। সূত্র: সিএনএন, বিবিসি, নউর নিউজ