নির্বাচনে অনিয়মের কথা স্বীকার করলেন সাবেক সিইসি নুরুল হুদা
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব ও অবৈধ হস্তক্ষেপের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের খাস কামরায় তার জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। আদালতে দায়িত্বরত এক উপপরিদর্শক জানান, বিকেল সোয়া ৫টায় জবানবন্দি গ্রহণ শুরু হয় এবং শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে।


এর আগে, দুই দফায় মোট আট দিনের রিমান্ড শেষে পিবিআইয়ের পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সৈয়দ সাজেদুর রহমান তাকে আদালতে হাজির করেন। এ সময় হুদা স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মতি জানালে তা রেকর্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
মামলার বাদী বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন খান। তিনি ২২ জুন শেরে বাংলা নগর থানায় এই মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ (২০১৪), এ কে এম নুরুল হুদা (২০১৮) ও কাজী হাবিবুল আউয়াল (২০২৪) সহ ওই সময়ের নির্বাচন কমিশনাররা অভিযুক্ত হয়েছেন।
এছাড়া মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পুলিশের সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজীর আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, “২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে পরিকল্পিতভাবে গায়েবি মামলা, অপহরণ, গুম, খুন ও নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখা হয়। এছাড়া ভয়ভীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে সংসদ সদস্য হিসেবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়, যা একটি দণ্ডনীয় অপরাধ।”
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, “এই অপরাধের প্রত্যক্ষ সাক্ষী হলেন সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্র এলাকার ভোটার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্য, সৎ প্রিজাইডিং অফিসার এবং স্থানীয় বাসিন্দারা।”
মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও যুক্ত করা হয়েছে।
কে এম নুরুল হুদার পর, একই মামলায় সাবেক আরেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকেও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।