‘দুর্নীতি দমন কমিশন বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ২:১৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৫, ২০২৩

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আজ বিএনপি দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত ও চলমান আন্দোলন দমন করতে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আবারও চক্রান্ত শুরু করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার। আর এই চক্রান্ত্রের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে দুদক।

তিনি বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রছায়ায় এবং পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের অনুগত ব্যবসায়ী, আমলা ও নেতাকর্মীরা দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে দুদক কোনো পদক্ষেপ নেয় না।

আজ শনিবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের নির্মম প্রতিহিংসায় দেশ আজ পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। সরকার দেশপ্রেমিক, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক কাউকেই রেহাই দিচ্ছেনা। চাঁদাবাজি, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার করে সকলের জীবন অতিষ্ঠ করে ফেলেছে। দেশে বিরজমান সীমাহীন দুর্নীতির মহাতাণ্ডব দুদকের চোখে পড়ে না। বর্তমানে আওয়ামী সরকারের ছত্রছায়ায় তাদের অনুগত ব্যবসায়ী, আমলা এবং নেতাকর্মীরা দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ দুদক নেয় না। জনগণকে বিভ্রান্ত ও আন্দোলন দমন করতে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে আবারও চক্রান্ত শুরু করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার। আর এই চক্রান্ত্রের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে দুদক।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৩ এপ্রিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আদালত। বিগত ১/১১ জরুরি অবস্থার অনৈতিক সরকার দেশকে বিরাজনীতিকরণের লক্ষে মাইনাস-টু ফর্মূলাসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাদের মিশন সফল করতে চেয়েছিল। তখন তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকলেও তার স্ত্রী ও জিয়া পরিবারের সদস্য বিধায় ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধেও একই মামলার আসামি করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘১/১১ জরুরি অবস্থার ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালের জরুরি অবস্থার সরকারের হাত ধরে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের মামলাগুলো বিভিন্ন উপায়ে স্থগিত বা প্রত্যাহার করলেও খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, ডা. জোবাইদা রহমানসহ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ১/১১ সরকারের দায়ের করা মামলাগুলো অব্যাহত রেখে সেগুলো ফরমায়েশি রায় দিয়ে তাদের রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র করেছে। যা আজও অব্যাহত আছে।’

Nagad

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ইতিপূর্বেও বলেছি এই ১/১১ থেকেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরানোর একটা স্কিম কাজ করছে, যা বর্তমানেও অব্যাহত রয়েছে। আর তারই অংশ হিসেবে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঠিক আগে আগে ২০১৮ সালে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়া হয়েছিল। এখনও ঠিক একই কায়দায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আগে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে একতরফাভাবে সাজা দেওয়ার সকল প্রকারের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে এই সরকার।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে তা অবান্তর, ভিত্তিহীন, অমূলক। চার্জ গঠন করে মামলার একতরফা যে রায় দেওয়া হবে তা হবে প্রতিহিংসামূলক ফরমায়েশি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের হীন এ কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে বিএনপি। সরকারকে এসব হীন ষড়যন্ত্র পরিত্যাগ করে সুস্থ ও সুষ্ঠু রাজনীতির ধারায় ফিরে আসার আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে মামলা দিয়ে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠায় চলমান আন্দোলন বিভ্রান্ত বা নস্যাৎ করা যাবে না বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ড. মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বেগম সেলিমা রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স প্রমুখ।