‘সরকার এনপিআর-এর মাধ্যমে জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ১০:৩৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১, ২০২২

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সরকার ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রার (এনপিআর)-এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে রিয়েল-টাইমে জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে।

তিনি আজ বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে বলেন, ‘আমি আশা করি, আমাদের আর প্রতি ১০ বছর পরপর জনশুমারি করার প্রয়োজন হবে না। বরং আমরা ইতিমধ্যে জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধনের কাজ শুরু করেছি এবং এর মাধ্যমে, আমরা চব্বিশ ঘন্টা রিয়েল-টাইমে ডেটা সংগ্রহ করতে সক্ষম হব।… আমরা প্রযুক্তির মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সঠিক সময়ে সঠিক সংখ্যা পেয়ে যাব।’

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এ ধরনের প্রয়াসে এর ধারাবাহিক সাফল্য বজায় রাখতে সক্ষম হবে।
মন্ত্রী আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ইতোমধ্যে সম্পন্ন ৬ষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনা কার্যক্রম সম্পর্কে
দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তিনি সংসদকে জানান যে ভবিষ্যতে বিশাল জনসংখ্যার শুমারি পরিচালনার জন্য এমন সময় ও ব্যয়-সাপেক্ষে আয়োজনের প্রয়োজন হবে না। কারণ, এখন জন্য সরকারের কাছে এটি সহজে ও অনায়াসে সম্পন্ন করার জন্য ব্যয়-সাশ্রয়ী প্রযুক্তি রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, পরিসংখ্যান বিভাগের কর্মীদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান এবং পাশাপাশি এর সার্বিক ব্যবস্থাপনা এখন আগের চেয়ে অনেক উন্নত ও শক্তিশালী।
তিনি বলেন, জনশুমারি থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত সরকারের সামগ্রিক উন্নয়নের বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা পেতে এবং কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। এ সংক্রান্ত তথ্য ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’

মান্নান বলেন, জনশুমারি অনুষ্ঠিত হওয়ার এক মাসের মধ্যে ২৭ জুলাই, ২০২২ জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে যা একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের সফল উদাহরণ।

Nagad

তিনি এই জনশুমারি সফল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা এখন ১৬৫,১৫৮,৬১৬; যার মধ্যে ৮১,৭১২,৮২৪ জন পুরুষ এবং ৮৩,৩৪৭,২০৬ জন নারী এবং ১২,৬২৯ জন তৃতীয় লিঙ্গের জনসংখ্যা ।

মোট ১১৩, ০৬৩, ৫৮৭ জন গ্রামীণ এলাকায় বাস করে এবং ৫২, ০০৯, ০৭২ জন শহর এলাকায় বসবাস করে। ১৫ জুন দেশে প্রথমবারের মতো ডিজিটালি জনসংখ্যা শুমারির কাজ শুরু হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১১ বছরে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ২১,১১৪,৯১৯ জন বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত আদমশুমারি অনুযায়ী ২০১১ সালে দেশের জনসংখ্যা ছিল ১৪৪,০৪৩,৬৯৭ জন।

১৯৭৪ সালে দেশের প্রথম আদমশুমারি ও গৃহশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৮১ সালে দ্বিতীয় আদমশুমারি, ১৯৯১ সালে ৩য়, ২০০১ সালে ৪র্থ এবং ২০১১ সালে ৫ম আদমশুমারি পরিচালিত হয়।

সর্বশেষ আদমশুমারির রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে। ১৯৮১ সালে এই হার ছিল ২.৮৪ শতাংশ, ১৯৯১ সালে ২.০১ শতাংশ, ২০০১ সালে ১.৫৮ শতাংশ, ২০১১ সালে ১.৮৬ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ১.২২ শতাংশ।

দেশের আটটি বিভাগের মধ্যে ঢাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি ১.৭৪ শতাংশ এবং বরিশালে সর্বনিম্ন ০.৭৯ শতাংশ।

১৫ জুন, সারা দেশে একযোগে ৬ষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনার কার্যক্রম শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সপ্তাহব্যাপী আদমশুমারির উদ্বোধন করেন।

২১ জুন আদমশুমারি শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বন্যার কারণে উত্তর-পূর্ব চারটি জেলায় ২৮ জুন পর্যন্ত আদমশুমারি চলে।
বিবিএস ১১ বছরেরও বেশি সময় পর এ আদমশুমারি করেছে।