‘লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধে জনসচেতনতার কোন বিকল্প নেই ’
সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, বর্তমানে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা অনেক বেশী। এক সময় তা ছিল না। লিভার ক্যন্সার প্রতিরোধে জনসচেতনতার কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে মসজিদের ইমামদের গুরুত্ব অপরিসীম। তারা জনস্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রচারে ভাল ভূমিকা রাখতে পারেন।
পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর ও জালালাবাদ লিভার ট্রাস্ট এর উদ্যোগে “লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ ও জনস্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিতে ইমামদের দায়িত্ব ও কর্তব্য” শীর্ষক সেমিনার এবং “ইসলামের দৃষ্টিতে চিকিৎসা ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান শীর্ষক খুৎবা” প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
নগরীর অভিজাত হোটেলের কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মুল বক্তব্য পেশ করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের ডিভিশন হেড অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি মাওলানা হাবিব আহমদ শিহাবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান আলোচক ছিলেন প্রবীণ আলেম হযরত শাহজালাল দরগাহ মাদ্রাসার মুহতামীম আল্লামা মুহিবুল হক গাছভাড়ী। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট আলেম শাইখুল হাদীস মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমী সিলেটের উপ-পরিচালক মাওলানা শাহ নজরুল ইসলাম। সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা এহসান উদ্দিন,মাওলানা হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেটের পুলিশ সুপার আরও বলেন,এখানে অনেকেই বলছেন মসজিদের ইমামদের দ্বীন দুনিয়ার কথা বলতে হবে। তবে মসজিদকে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা, দ্বীনের আমল প্রতিপালনে সচেষ্ট রাখতে হবে। পুলিশ সুপার এক্ষেত্রে ইমামদের ভারসাম্যপূর্ণ কথা বলতে অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, একসময় যদি প্রশ্ন করা হত সমাজের ভাল লোক কে তাহলে নির্দ্বিধায় জবাব আসতো মসজিদের ইমাম।এটি ধরে রাখতে হবে।
প্রধান অতিথি বলেন, আজকে পশ্চিমা বিশ্বসহ সারা দুনিয়া গুড গভর্ণমেন্স বা সুশাসনের শ্লোগান দিচ্ছে। কিন্তু সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামের খলিফায়ে রাশেদুনদের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে হবে।তিনি ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলী রাঃ কর্তৃক তৎকালীন মিশরের গভর্নর মালিক আল আশকারকে প্রেরিত চিঠির কথা বর্ণনা করে বলেন,সুশাসনের এর চেয়ে বড় দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে আর নেই। এই চিঠি নিয়ে জাতিসংঘ গবেষণা করেছে, আরও গবেষকরা কাজ করেছেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘ ও গবেষকদের মতে সুশাসনের জন্য এর চেয়ে সর্বোত্তম ফর্মুলা আর খোঁজে পাওয়া যায় নি। তাই এ সময়ে শাসনকর্তাদের সত্যিকারের জনসেবা হতে হলে আলীর সে চিঠির দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, মিশরের শাসনকর্তার নিকট প্রেরিত চিঠিতে ইসলামের চতুর্থ খলিফা গভর্নর কে নিজকে আল্লাহর প্রেরিত সেবক, ক্ষমাশীল হওয়া,ন্যায় ও সমতার প্রতি দৃষ্টি দেয়া, স্বজনপ্রীতি না করা সহ অনেক নির্দেশনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি সরকারী চাকরিকে মানবতার সেবামুলক কাজ আখ্যায়িত করে বলেন, আমি চেষ্টা করছি আমার দ্বারা যেন কোন নিরীহ মানুষ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত না হয়। আমি না পড়ে কোন মামলার কাগজে স্বাক্ষর করি না।
মুল বক্তব্যে অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল বলেন, ইসলামের বিধি বিধানগুলো খুবই স্বাস্থ্যসম্মত। আমি সারাদেশে লিভার ক্যান্সার ও এর প্রতিরোধে চিকিৎসার পাশাপাশি জনসচেতনতার কাজ করছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বিশেষ ভাবে সিলেটে কাজ শুরু করেছি। আমি সিলেটেরই সন্তান। এটা কোন রাজনীতি নয়। জনগণকে সচেতন করার লক্ষ্যে জনগণকে সাথে নিয়ে আমৃত্যু এ কাজ চলবে।
সেমিনারে নগরীর প্রায় দু’শতাধিক ইমাম,বিশিষ্ট সুধীজন,প্রিন্ট,ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।