মাটির কাজ শেষ চলছে সাজসজ্জার কাজ

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি:সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ৪:৩২ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজা। আগামী পহেলা অক্টোবর শুরু হতে যাচ্ছে এই শারদীয় উৎসব। এই উৎসবকে ঘিরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা।

শেষ সময়ের প্রস্তুতিতে মাটির কাজ শেষ করে এখন চলছে সাজসজ্জার কাজ। রঙের আঁচড়ে দেবী দুর্গাকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে নানা রঙ-ঢঙে। পূজা ঘনিয়ে আসায় এখন রাত দিন ব্যস্ত সময় পার করছে মৃৎশিল্পীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিটি প্রতিমাকে রঙ-তুলির নিপুণ আঁচড়ে রাঙাতে ব্যস্ত শিল্পীরা। চলছে সাজ-সজ্জার কাজও। দেবী দুর্গার সাথে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী আর সরস্বতী দেবীকেও। যেন দম ফেলার ফুসরত নেই মৃৎশিল্পীদের। পুরুষদের কাজে সাহায্য করছে বাড়ির নারীরাও।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) আশুলিয়ার দক্ষিণ বাইপাইল চারাল পাড়া স্বর্গীয় গুরু দোয়াল পলানের আঙ্গিনা সার্বজনীন দূর্গামন্দিরে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়।

দুই যুগেরও অধিক সময় ধরে এই পূজামণ্ডপে তারা সারদীয় উৎসব পালন করেন। এ বছরও সকল দল মত নির্বিশেষে এই স্বর্গীয় গুরু দোয়াল পলায়ন আঙ্গিনা সর্বজনীয় দুর্গা মন্দিরে সকল ধরনের বা সকল ধর্মের মানুষের আগমনে মিলনমেলায় পরিণত হবে বলে আশা করেন এই পূজামণ্ডপে সাধারণ সম্পাদক সম্ভু চন্দ্র সরকার ।

এ বছর শিল্পাঞ্চল সাভার উপজেলায় পূজামণ্ডপ হচ্ছে ২৩৪টি। এর মধ্যে সাভার থানাধীন এলাকায় ১৪৩টি ও আশুলিয়া থানাধীন এলাকায় ৯১টি পূজামণ্ডপ এই সাারদীয় উৎসব পালিত হবে।

Nagad

মণ্ডপগুলোতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় ইতিমধ্যেই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এছাড়াও ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আসাদুজ্জামান পিপিএম (বার) সকল পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে মত বিনিময় করে শারদীয় দুর্গা পূজা নির্বিঘ্ন ও উৎসব মুখর পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

এসময় তিনি আরও বলেন অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করতে প্রতিটি পূজা মণ্ডপে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এখন যে সব এলাকায় পূজা মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে সেসকল স্থানে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।

মৃৎশিল্পী গৌতম পাল বলেন, আমি গত ২০ বছর ধরে মূর্তি তৈরিতে কাজ করে আসছি। এ বছর দক্ষিণ বাইপাইল স্বর্গীয় গুরু দোয়াল পলানের আঙ্গিনা সার্বজনীন দূর্গামন্দিরের কাজ করছি। এখন পর্যন্ত সবকটি প্রতিমার মাটির কাজ শেষ করেছি। শেষ সময়ের প্রস্তুতি হিসেবে এখন চলছে রঙ ও সাজসজ্জার কাজ।

রবি-সোমবারের মধ্যে তাদের কাজ শেষ হয়ে যাবে। অন্যদিকে ৪ জন মৃৎশিল্পীর ২০ দিনের কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এই পূজামণ্ডপ প্রস্তুত হতে চলছে বলে জানান পিজুশ পাল নামের এক মৃৎশিল্পী।

সাভার উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির যুগ্ম সাধারণ ও আশুলিয়ার পূজা উদযাপন কমিটির দায়িত্ব প্রাপ্ত সম্ভু চন্দ্র সরকার বলেন, পূজার যে ব্যাপারটা বা পূজা উদযাপন উপলক্ষে যে আতঙ্ক থাকে সেটা আমরা কখনই কোন বছরে ফেইস করিনা। আমাদের এখানে যে স্থানীয় প্রশাসন আছে তাদের থেকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা পেয়ে থাকি। তাছাড়া পূজা শুরু হওয়ার দিন থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দিয়ে থাকি।

তিনি আরও বলেন, আমি যেহেতু আশুলিয়া থানার দায়িত্ব প্রাপ্ত আছি। সেহেতু আমাদের আশুলিয়া থানার অন্তর্গত ৯১টি পূজামণ্ডপের প্রত্যেকটির খোঁজ-খবর আমি নিয়ে দেখেছি কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বা ঘটার সম্ভাবনা নেই।

ঢাকা জেলার পূজা উদযাপন পরিষেদের সাধারণ সম্পাদক ও সাভার উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বরুণ ভৌমিক নয়ন বলেন, সাভারে গতবারের চেয়ে এবার ২০টিরও অধিক মণ্ডপে এবার শারদীয় দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে প্রশাসনের সর্বচ্চ তৎপরতা রয়েছে। এছাড়াও আমাদের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবীও আছে। আশা করছি কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই নির্বিঘ্নে এবারের শারদীয় উৎসব সার্বজনীন রূপ পাবে।