পর্দা নামলো ৮ম বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্বের
ঢাকার প্রাণকেন্দ্র আগারগাঁওয়ে অবস্থিত জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হলো আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ৮ম বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্ব। বিকেলে পুরস্কার বিতরণী ও সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্য শেষ হয় দিনব্যাপী এই আয়োজন।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) এই অনুষ্ঠানে সারাদেশ আগত ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীদের থেকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ১২জন চ্যাম্পিয়ন, ১৭ জন প্রথম রানার্স আপ এবং ২৩ জন দ্বিতীয় রার্নাস আপ সহ মোট ৫২ জন শিক্ষার্থীকে বিজয়ী করা হয়।
সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুস্থানের অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম. তামিম, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মাহমুদুর রহমান, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের পরিচালক এ. কে. এম. লুৎফুর রহমান সিদ্দীক, বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী, বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির সহসভাপতি মুনির হাসান ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী। সমাপনি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. ইফতেখারুজ্জামান।
সভাপতির বক্তব্যে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “বিজ্ঞান মানুষকে আলোকিত করে। সায়েন্স অলিম্পিয়াডের মত আয়োজনগুলো থেকে তোমরা নিজেরা আলোকিত হবে ও আশেপাশের সমস্যাগুলো সমাধান করে সেখানেও আলো ছড়াতে পারবে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, “শিক্ষা ও জ্ঞানের পরিধি অসিম। তাই তোমাদের অসিমে চিন্তা করতে হবে। কাঠামোগত প্রশ্ন করা চলবে না। বিজ্ঞানমনস্কতা কেবল বিজ্ঞানের প্রয়োগের উপর নির্ভরশীল না। সকল বিজ্ঞানের মূলে আছে প্রশ্ন। তোমাদের প্রশ্ন করা শিখতে হবে।”
এদিকে ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অংশগ্রহণকারী ও তাদের অভিভাবকদের আগমন শুরু হয়। ৮:৩০ টায় জাতীয় সংগীত গাওয়ার মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির সহ-সভাপতি মুনির হাসান, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের কিউরেটর আনিসুর রহমান ও বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী।
এরপর জাতীয় পর্বের অলিম্পিয়াড শুরু হয়। যেখানে শিক্ষার্থীরা পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিজ্ঞানের ২টি ছোট সমস্যা ও ১টি বড় সমস্যার সমাধান করে। অলিম্পিয়াড শেষে অংশগ্রহণকারীদের জন্যে ছিল ড্রোন উড্ডয়ন, রোবট প্রদর্শনী ও 6D মুভি প্রদর্শনী। দুপুরে নামাজ ও খাবারের বিরতির পর শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন সায়েন্স এক্সপেরিমেন্ট করে দেখান বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির স্বেচ্চাসেবক এসএস সিফাত। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সাথে শিক্ষার্থীদের মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্ন উত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয় । এই সেশন পরিচালনা করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মুশতাক ইবনে আইয়ুব এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ সৌমিত্র চক্রবর্তী।
দিনব্যাপী আয়োজনের বিশেষ অংশ ছিল বিজ্ঞান জাদুঘরের আয়োজনে বিজ্ঞান কুইজ ও বিজ্ঞান বিষয়ক বক্তৃতা। বিষয় রাখা হয়েছিল ‘খাদ্য নিরাপত্তায় বিজ্ঞান’ ও ‘বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী প্রযুক্তির ব্যবহার’। এর বিজয়ী ১৬ জনকে জাদুঘরের পক্ষ থেকে বিশেষ পুরস্কার দেয়া হয়।
জাতীয় পর্ব থেকে নির্বাচিত ৪৬জন বিজয়ী অংশ নিবে ৮-১০ই অক্টোবর অনুষ্ঠাতব্য জাতীয় ক্যাম্পে। সেখান থেকে নানান বাছাই প্রক্রিয়া শেষে গঠন করা হবে ৬ সদস্য বিশিষ্ট আইজেএসও বাংলাদেশ দল। যারা অংশ নিবে কলোম্বিয়ার বোগোতায় অনুষ্ঠেয় ১৯তম আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডে।
এবারের ৮ম বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড যৌথভাবে আয়োজন করছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতি (এসপিএসবি), বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন (বিএফএফ) ও জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর। আয়োজনটির টাইটেল স্পন্সর হিসেবে আছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। সহযোগী হিসেবে আছে দৈনিক প্রথম আলো ও ম্যাসল্যাব। ম্যাগাজিন পার্টনার কিশোর আলো ও বিজ্ঞানচিন্তা। স্থানীয় আয়োজক ম্যাসন বিজ্ঞান ক্লাব, অব্যয় ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির খুলনা জেলা ইউনিট।