ঝিনাইদহে যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ২:৪২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২২

সংগৃহীত

ঝিনাইদহের মহেশপুরে বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা দেশে এসে ফেরত চাওয়ায় এক যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ভোলাডাঙ্গা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও পুলিশ জানায়, প্রেমের সম্পর্কের জেরে প্রায় আট বছর আগে ভোলাডাঙ্গা গ্রামের খোদাবক্সের ছেলে বকুল হোসেনের সাথে একই গ্রামের লুৎফর রহমানের মেয়ে লতিফার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর বকুল বিদেশে পাড়ি জমায়। সেখানে উপার্জিত অর্থ তার স্ত্রীর কাছে পাঠায়। দীর্ঘ কয়েক বছর বিদেশে থাকার পর দেশে ফিরে জানতে পারেন তার স্ত্রী অন্যত্র বিয়ে করে সংসার করছেন। এ সময় তার পাঠানো অর্থ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে ফেরত চাইলে তারা টাকা দিতে অসম্মতি জানায়। এনিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ হলেও কোনো সমাধান হয়নি।

বকুলের ভাবি মুন্নী গণমাধ্যমকে বলেন, বিদেশে থাকা অবস্থায় বকুল তার স্ত্রী লতিফার কাছে টাকা পাঠাতো। দেশে ফিরে সে দেখে তার স্ত্রী অন্য কারও সাথে বিয়ে করে সংসার করছে। এ অবস্থায় বকুল পাগলের মতো হয়ে গেছে। সব সময়ই টাকা আর স্ত্রীকে ফেরত চাইতো। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে শ্বশুরবাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তার শ্বশুরসহ ওই বাড়ির লোকজন বকুলকে অমানবিক নির্যাতন করে।

বকুলের চাচি শিরিন বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথমে শ্বশুর পেছনে কোদাল দিয়ে আঘাত করে। এরপর অন্যরা এসে পা গাছের সাথে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। বকুল চিৎকার করছিল কিন্তু তারা শোনেনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বকুলের শ্বশুর লুতফার রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথমে আমি মারিনি। প্রথমে রাস্তায় তাকে মারা হয়েছে। পরে বাড়িতে ধরে এনে আবার মারা হয়। তখন আমিও মারছি।

বকুলের স্ত্রী লতিফা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, বকুল যখন বিদেশে ছিল তখন তার মা-বাবা আমাকে নির্যাতন করতো। এরপর আমি বাবার বাড়িতে চলে আসি এবং অন্য জায়গায় বিয়ে করে সংসার করছি। এখন বকুল দেশে ফিরে বলছে, সে আমার কাছে টাকা পাঠিয়েছে। কিন্তু সে কোনো টাকা পাঠায়নি। সে বারবার আমাদের বাড়িতে এসে টাকা চাইলে এ নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়। কিন্তু সেখানে বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর কোনো প্রমাণ সে দেখাতে পারেনি।

Nagad

তিনি আরও বলেন, একদিন পুলিশ এ বিষয়ে আমাদের বাড়িতে তদন্তে আসলে বকুল পিটিয়ে এক পুলিশের হাত ভেঙে দেয়। এরপর আমার আট বছর বয়সী ছোট বোনকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল বকুল। তখন তাকে ধরে মারা হয়েছে।

মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের কোনো সদস্যকে নির্যাতন করা হয়নি। যদি নির্যাতন করা হতো তাহলে অবশ্যই সাথে সাথে সেটা নিয়ে আমরা কঠোর আইনি ব্যবস্থায় যেতাম। তবে এই ঘটনায় বকুলের পরিবারের পক্ষ থেকে নির্যাতনের মামলা ও তার শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে ধর্ষণ মামলা করা হয়েছে। এখন তদন্ত করে সঠিক বিষয় বের করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

সারাদিন/১৬ অক্টোবর/এমবি