আইসিটি হচ্ছে অক্সিজেনের মতো : পলক

তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৭:৫৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০২২

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি-বলেন, “আইসিটি হচ্ছে অক্সিজেনের মতো। কোথাও আমরা ভুমিকা পালন করছি বাস্তবায়নকারী হিসেবে, কোথাও পরামর্শক হিসেবে আবার কোথাও সহায়ক হিসেবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার মাননীয় আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ আমাদের শিখিয়েছেন কাজগুলো করতে হবে আইসোলেটেড ওয়েতে নয় বরং হোল অব গভর্নমেন্ট অ্যাপ্রোচ নিয়ে, কোলাবোরেশন এবং কো-অর্ডিনেশন মাইন্ডসেট নিয়ে।”-

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকার গুলশানে দি ওয়েস্টিন হোটেলে জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো (বিএমইটি) কর্তৃক আয়োজিত “ডিজিটালাইজেশন অব বিএমইটি সার্ভিসের লঞ্চিং সিরেমনি” অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময় বলেন, সরকার ব্যবসা করবে না কিন্তু ব্যবসা করার ক্ষেত্র তৈরি করে দেবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান কাজ করলে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। বর্তমানে আমরা যে নিজেদের শক্তিশালী মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ হিসেবে পরিচয় দিতে পারছি তার মূল তিনটি শক্তি হলো কৃষি, পোষাক এবং প্রবাসী। এই কৃষি, পোশাক এবং প্রবাসী এই তিনটি সেক্টর হচ্ছে আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। তিনি বলেন যে, একদিকে প্রবাসী ভাই-বোনেরা আমাদের প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে। অপর দিকে পোশাকশিল্প থেকে ভাইবোন ৩০-৩৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানী আয়ের সুযোগ করে দিচ্ছে। কৃষিতে সাড়ে ৩ কোটি শ্রমিক আমাদের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। সেকারনে আমরা স্যালুট জানাই আমাদের ১ কোটি ২০ লক্ষ ভাই বোনদের যাদের রক্ত, ঘাম এবং শ্রমের মধ্য দিয়ে আমাদের বেতন ভাতা হয়, রাস্তাঘাট হয়, আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ মৌলিক চাহিদাগুলোর মূল যোগান দেয় আমাদের প্রবাসী ভাইয়েরা।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি যে তারাও স্মার্ট প্রসেস ব্যবহার করছে। যারা বেশি করে ডেটা প্রডিউস করছে এবং ডেটা এনালাইসিস করতে পারছে তাদের যে সম্পদ তৈরি হচ্ছে তা ভবিষ্যতে প্রাকৃতিক সম্পদ তেল, সোনা বা হীরার থেকেও বেশি মুল্যবান হয়ে যাবে। এবং তার বড় প্রমান আজকের ডিজিটালাইজেশন অফ বিএমইটি সার্ভিস “প্রবাসী” অ্যাপ।

তিনি আরো বলেন, যদি আমাদের এই মধ্যম আয়ের দেশ থেকে জ্ঞান ভিত্তিক উদ্ভাবনী অর্থনীতির দিকে যেতে হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে একটি জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হয় তবে প্রযুক্তিকে আমাদের পোশাক শিল্পে ব্যবহার করতে হবে, প্রবাসী কর্মসংস্থানে ব্যবহার করতে হবে এবং আমাদের কৃষিতেও ব্যবহার করতে হবে। তবেই আমরা একটা স্মার্ট ইকোনমির দিকে এগিয়ে যেতে পারবো।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি। তিনি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে উভয়পক্ষের সমান দায়িত্ব ও অংশীদারিত্বের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ‘যখনই আমরা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের কথা বলি, সেটাকে অংশীদারত্বই হতে হয়। সরকার সুযোগ দেয় কারণ তার সেবাটি প্রয়োজন। ইতোমধ্যে অংশীদারিত্বের ফলাফলও পাওয়া যাচ্ছে যার একটি উদাহরণ হল বিএমইটি ডাটাবেজ। তিনি বলেন যে বিএমইটির একার পক্ষে এটা করা সম্ভব নয়। সবাইকে নিয়ে একসাথে কাজ করতে হবে। মাননীয় মন্ত্রী বলেন যে আমার কাজ কর্মীদের বিদেশ পাঠানো। এখন আর এনালগ পদ্ধতিতে পাঠানো যাবে না, ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠাতে হবে।

Nagad

মন্ত্রী আরো বলেন যে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠানোর উদ্দেশ্যই হচ্ছে কর্মীদের যেন দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে না হয়। কর্মীকে বিদেশ পাঠানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে হবে। ডিজিটালাইজেশন আমাদের তাতে সহায়তা করবে এবং বিদেশে কর্মী পাঠানোর ধাপ কমে আসবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এর মহাপরিচালক মোঃ শহীদুল আলম, এনডিসি। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্বে ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিস (বায়রা)-এর সভাপতি মোহাম্মাদ আবুল বাশার। এছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহের প্রতিনিধিগণ, জনপ্রতিনিধিসহ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বিদেশগামী কর্মীদের সর্বশেষ ধাপ, জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরো (বিএমইটি) কর্তৃক প্রদত্ত বহির্গমন ছাড়পত্র বা ইমিগ্রেশন ক্লিয়ারেন্স ডিজিটাল পদ্ধতিতেই এখন করা সম্ভব হবে। একজন বিদেশগামী কর্মী স্বল্প সময়ে, কম অর্থ ব্যয়ে এবং কোন ধরণের ভোগান্তি ছাড়া অনলাইনেই ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন এবং বিএমইটি স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করতে পারবেন। সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রক্রিয়াটি প্রস্তুত করেছে বিএমইটি-র ডিজিটাল সার্ভিস প্রোভাইডার “আমি প্রবাসী লিমিটেড”। ক্লিয়ারেন্স স্মার্ট কার্ড এখন সত্যিকার অর্থেই “স্মার্ট”। QR Code ভিত্তিক এই কার্ডটি খুব সহজে চাইলে যে কেউ পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে যাচাই করতে পারবেন। ইতোমধ্যে “আমি প্রবাসী” অ্যাপের মাধ্যমে বিএমইটি ডাটাবেজে নিবন্ধন, ট্রেনিং কোর্সে আবেদন, ট্রেনিং ও প্রি-ডিপার্চার ওরিয়েন্টেশন (পিডিও) সেশন বুকিং, ট্রেনিং ও পিডিও সার্টিফিকেট ডিজিটালাইজেশনে ভূমিকা রেখেছে।