অপহরণের ৫৬ ঘণ্টা পর বস্তাবন্দি শিশুর লাশ উদ্ধার

দিনাজপুর সংবাদদাতাদিনাজপুর সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ৬:২৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৫, ২০২২

ছবি- সংগৃহীত

দিনাজপুরে অপহরণের ৫৬ ঘণ্টা পর মাটিতে পুঁতে রাখা বস্তাবন্দি শিশু আরিফুজ্জামানের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার (০৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সোয়া ১টায় খানসামা উপজেলার পাকেরহাটস্থ মহাসড়ক সংলগ্ন জিকরুলের মিলের পার্শ্বে নীলফামারী সদর থানার পুলিশের সাবেক গাড়ি চালক আব্দুস সালামের বাড়ির আঙ্গিনা খুঁড়ে বস্তাবন্ধী হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ওই শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (০৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ এইসব কথা জানান।

তিনি জানান, অপহৃত শিশু রক্ষায় আমাদের জোর প্রচেষ্টা ছিল। কিন্তু মুক্তিপণ চাওয়ার আগেই শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে। মুক্তিপণ বাবদ প্রথম দফায় শিশুটির বাবার কাছে ৫৪০০ টাকাও বিকাশে নিয়েছে।

পুলিশ সুপার ইফতেখার আহমেদ বলেন, ৮ বছরের শিশু আরিফুজ্জামানের পিতা মো: আতিউর রহমান গত ০২ ডিসেম্বর রাতে শিশু নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি করার পরেই আমরা মামলা নথিভুক্ত করে এই ঘটনায় সন্দেহভাজন তিন যুবকে আটক করি। আটককৃত কায়েমপুর মাস্টারপাড়া গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৪), গফুর উদ্দীন শাহপাড়া গ্রামের ওবায়দুরের ছেলে শামীম (২২) ও একই এলাকার মো: রিয়াজুলের ছেলে শাহিনুর।

অপহরণ ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে তারা অস্বীকৃতি জানালেও কৌশলে তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড আপস) মো: আসলাম উদ্দিনের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বীরগঞ্জ সার্কেল), খোদাদাদ হোসেন ও সহকারী পুলিশ সুপার (কাহারোল সার্কেল) মো: রওশন আলীর সমন্বয়ে একটি টিম শিশুটি উদ্ধার পরিচালনা করে।

শিশু আরিফুজ্জামান বাড়ির অদূরে চেহেলগাজী মাদ্রাসার ২য় শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। মাটিতে পুঁতে রাখা হাত-পা বাঁধা শিশু আরিফুজ্জামানের বস্তাবন্দি লাশটি মিলেছে কায়েমপুরস্থ তাদের বাড়ি থেকে কমপক্ষে সাত কিলো মিটার দূরে।

Nagad

গত শুক্রবার (০২ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় খানসামা উপজেলার ইউপি ৪ নং খামার পাড়া ইউপির কায়েমপুর ডাক্তার পাড়া গ্রাম থেকে আরিফুজ্জামানকে ফুসলিয়ে নিজের বাই সাইকেলের ক্যারিয়ারে উঠিয়ে নিয়ে যায় শরিফুল। ভাড়া মেসে নিয়ে কম্পিউটারে পর্ণ ছবি দেখিয়ে বলাৎকারের পর বিকেল ৫টায় হত্যা করে শিশু আরিফুজ্জামানকে।

হত্যার পর রাত সাড়ে ৮টায় শিশুটির পিতা আতিউর রহমানের কাছে মুক্তিপণ দাবি করে কিলার শরিফুল (২২)। কৃষক আতিউরের কাছে নগদ তেমন টাকা না থাকায় সন্তানকে বাঁচাতে প্রথম দফায় ৫ হাজার ৪০০ টাকা বিকাশ করে। বিকাশ থেকে ওই টাকা তুলে খোন্তি ক্রয় করে ভাড়া মেসের আঙ্গিনা খুঁড়ে হাত-বাঁধা আরিফুরজ্জামানের লাশ বস্তায় ভরে মাটিতে পুঁতে রাখে।

গ্রেপ্তারকৃত কিলার শরিফুল ইসলামকে আদালতের মাধ্যমে জেনে পাঠানো হয়েছে। অধিকতর তদন্তের জন্যে আদালতের কাছে কিলার শরিফুলের রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ।

সারাদিন/০৫ ডিসেম্বর/এমবি