অবশেষে একসাথে রাজ-পরী
অবশেষে আবারও একসাথে দেখা গেলো অভিনেতা শরিফুল রাজ ও অভিনেত্রী পরীমনিকে। অভিনেত্রী শিরিন শিলার ভিডিও কলের ফ্রেমে তাদের একসাথে দেখা গেছে।
বুধবার (০৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১১টা ৪২ মিনিটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজে ভিডিও কলে কথা বলার কয়েকটি স্ক্রিনশট পোস্ট করেন শিরিন শিলা। সেখানে রাজ-পরী ও তাদের একমাত্র ছেলে শাহীম মুহাম্মদ রাজ্যের সাথে ভিডিওতে কথা বলতে দেখা যায় শিরিন শিলাকে।
স্ক্রিনশট পোস্ট করে তার ক্যাপশনে শিরিন শিলা লিখেছেন, “অভিনন্দন বান্ধবী পরীমনি। সব ভুল-বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে আবার নতুন করে সুখের সংসার গড়ে তোলার জন্য।”
অভিনেত্রী শিরিন শিলা আরও লিখেছেন, “যারা পরীমনির সংসারে ভাঙন দেখে খুশি হয়েছিলেন, তারা বিষ খেয়ে মরে যাও। কারণ, যারা মানুষের সুখ দেখতে পারে না তাদের বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। পরী-রাজ, রাজ্যের জয় হোক।”
এর আগে বুধবার রাজ-পরীর বসুন্ধরার বাসার বাসার ম্যানেজার সংবাদকর্মীদের বলেন, “পরীমনি যে রক্তের কথা বলছেন, সেটা রাজের রক্ত। অ্যাকুরিয়াম সরাতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।”
ম্যানেজার আরও বলেন, “রাজ নিজেই অ্যাকুরিয়াম সরাচ্ছিলেন। সেটি পড়ে ভেঙে তার হাত কেটে গেছে। ওই সময় রাজ্যও পাশে ছিল।”
মধ্যবয়সী ওই ম্যানেজারের ভাষ্য, “অনেকদিন ধরেই ফ্ল্যাটগুলো দেখভাল করছি। প্রতিদিনই তাদের (রাজ-পরী) সাথে দেখা হয়। দুইজনের মধ্যে বেশ মিল রয়েছে। হঠাৎ কি হলো, বুঝতে পারলাম না!”
ভাঙনের গল্পের শুরুতে নতুন বছরের প্রথম প্রহরেই সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে দুইটি ছবি প্রকাশ করেছেন আলোচিত-সমালোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি। ওই ছবিগুলোতে দেখা গেছে, কোলবালিশে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। আরেকটি ছবিতে বিছানার চাদরেও ছিটিয়ে আছে লাল রক্তবিন্দু। তারই পাশে নায়িকার পা। ক্যাপশনে এই নায়িকা লিখেছেন, “হ্যাপি নিউ ইয়ার। আগামীকাল সংবাদ সম্মেলন, লোডিং…।”
এ নিয়ে নায়িকা পরীমনি বলেন, “একটা সম্পর্কে পুরোপুরি সিরিয়াস বা খুব করে না চাইলে একটা মেয়ে বাচ্চা নেওয়ার মতো এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে না কখনোই। আমার জীবনের সবটুকু চেষ্টা যখন এই সম্পর্কটাকে ঠিকঠাক টিকিয়ে রাখা, তখনই আমাকে পেয়ে বসলো। যেন শত কোটিবার যা ইচ্ছে তাই করলেও সব শেষে ওই যে আমি মানিয়ে নেই এটা রীতিমতো দারুণ এক সাংসারিক সূত্র হয়ে দাঁড়াল।”
পরীমনি আরও বলেন, “আমি জোর দিয়ে বলতে পারি আমাদের এই সম্পর্ক এতদিন আমার এফোর্টে টিকে ছিল শুধু। কিন্তু বারবার গায়ে হাত তোলা পর্যায়ে পৌঁছালে কোনো সম্পর্কই আর সম্পর্ক থাকে না। স্রেফ বিষ্ঠা হয়ে যায়। রাজ্যের দিকে তাকিয়ে বারবার সব ভুলে যাই। সব ঠিক করার জন্যে পড়ে থাকি। কিন্তু তাতে কি আসলেই আমার বাচ্চা ভালো থাকবে! না। একটা অসুস্থ সম্পর্ক এত কাছে থেকে দেখে দেখে ও বড় হতে পারে না। তাই আমি, রাজ্য এবং রাজের মঙ্গলের জন্যই আলাদা হয়ে গেলাম।”
নায়িকা পরীমনি বলেন, “রাজ এখন শুধু আমার প্রাক্তনই না, আমার ছেলের বাবাও। তাই রাজ্যের বাবার সন্মান রাখতে পাবলিকলি আর বাকি কিছু বলছি না আমি। তবে আমার ওপর তার আর তার পরিবারের কোনো অসুস্থ আচরণ বা হার্মফুল কিছু করার চেষ্টা করলে, আমি কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবো।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা নিশ্চয়ই আমার মানসিক অবস্থা বুঝতে পারবেন আশা করছি। আমাকে একটু সময় দিন। শারীরিক ভাবেও আমি বিধ্বস্ত। রাজ্য তার বাবা-মাকে একসাথে নিয়ে বড় হতে পারল না। এর থেকে কষ্টের আর কি হতে পারে আমার কাছে।”
অপরদিকে, ব্যক্তিজীবনের বিষয়গুলো নিয়ে খুব একটা কথা বলতে নারাজ অভিনেতা শরিফুল রাজ। তারপরও তিনি গণমাধ্যমে বলেন, “আমি সরকারি চাকরি করি না। আমাকে ছুটি দেওয়ার কিছু নেই। দ্রুতই আইনজীবীর সাথে বসব। সন্তান কার কাছে থাকবে, এই ব্যাপারে তিনি যে আইনি পরামর্শ দেবেন- সেটাই মেনে নেব।”
বিষয়টি এখানেই শেষ হতে পারত। কিন্তু মঙ্গলবার (০৩ জানুয়ারি) ভোর ৪টা ৪৮ মিনিটের দিকে রাজ তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। যেখানে প্রথমবার প্রকাশ করেছেন পরীমনিকে নিয়ে তার নেতিবাচক অস্থিরতার বিষয়টি।
রাজ লিখেছেন, “হ্যালো গডফাদারস অ্যান্ড গং। আই ওয়ান্ট টু নো ইউ গাইজ। আই লাইভ ইন ঢাকা, আই উড লাভ টু চিয়ার্স।”
রাজের এমন পোস্টে স্পষ্ট, তিনি আড়াল থেকে হয়তো কোনো ‘গড ফাদার’র কাছ থেকে হুমকি পেয়েছেন বা পাচ্ছেন। সেই উড়ো হুমকিদাতাদের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করতে চান চিত্রনায়ক রাজ।
এই বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমকে রাজ বলেন, “কথাগুলো যাদের বলেছি, তারা ঠিকই বুঝে গেছে। আমিও অপেক্ষায় আছি তাদের দেখার! হুমকি-ধামকি দিয়ে কোনো লাভ নেই। আমি এসবের তোয়াক্কা করি না। আমি শান্তিপ্রিয় মানুষ। আর শান্তিপ্রিয় মানুষ খেপলে তাকে কিন্তু দমানো যায় না, মনে রাখবেন।”
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর গোপনে বিয়ে করেন চিত্রনায়িকা পরীমণি ও অভিনেতা শরিফুল রাজ। ‘গুণিন’ চলচ্চিত্রের শুটিং করতে গিয়ে তাদের পরিচয় হয়। এরপর ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি সেই খবর প্রকাশ্যে আনেন রাজ-পরী। এরপর ওই বছরের ২২ জানুয়ারি পারিবারিক আয়োজনে বিয়ে সারেন তারা। একই বছরের ১০ আগস্ট তাদের ঘরে এসেছে পুত্রসন্তান শাহীম মুহাম্মদ রাজ্য।
সারাদিন/০৫ জানুয়ারি/এমবি