লালমনিরহাটে অপহৃত স্কুল শিক্ষক ৫ দিন পর উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২
লালমনিরহাটে অপহরণের পাঁচদিন পর নুরুল আমিন (৫০) নামের এক শিক্ষককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অপহরণকারী চক্রের দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন লালমনিরহাট পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
এর আগে শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) ভোরে নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ হন আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের দোলাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন। তিনি দোলাপাড়া গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে।
গ্রেফতাররা হলেন, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ভেলার পাড়া বেলুয়া বাজার এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে আব্দুল বারি (৪৩) ও নেত্রকোনার পুর্বধলা উপজেলা নারানদিয়া ইউনিয়নের ভুগি গ্রামের সিদ্দুকুর রহমানের ছেলে শফিকুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিনের মতো গত শুক্রবার নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন। ভোর রাতে কালো গ্লাসের দুটি মাইক্রোবাসে কয়েকজন গিয়ে গেটে নক করেন। এ সময় ঘুমন্ত থাকায় কেউ গেট খোলেননি। পরে দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে দরজা ভেঙ্গে প্রথমে নুর আমিনের ছোট ভাই রুহুল আমিনের ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্র দেখিয়ে পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে তাকে বের করে আনেন। রুহুল আমিনের চিৎকার শুনে নুরুল আমিন বের হলে ভাইকে ছেড়ে দিয়ে নুরুল আমিনকে গাড়িতে তোলেন তারা।
এ সময় তার চাচা আবু তালেব ও ছোট ভাই রুহুল আমিন গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আটকানোর চেষ্টা করলে অস্ত্র দিয়ে তাদেরকে কুপিয়ে আহত করে নুরুল আমিনকে নিয়ে চলে যায় অপহরণকারী চক্রটি। সেই থেকে কোনো সন্ধান মেলেনি অপহৃত প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিনের। এদিকে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় পরদিন অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন অপহৃত শিক্ষকের ছেলে আব্দুর রউফ। মামলাটি আমলে নিয়ে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে নুরুল আমিনের অবস্থান নিশ্চিত করে পুলিশ।
এসপি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) দিনগত রাত ৩টার দিকে ঢাকার তেঁজগাও এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি বাসা থেকে শিক্ষক নুরুল আমিনকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় ওই বাসায় থাকা অপহরণকারী সন্দেহে আব্দুল বারি ও শফিউল আলমকে আটক করে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
উদ্ধার শিক্ষক নুরুল আমিন শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ থাকায় তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সুস্থ হলে তাকে তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। গ্রেফতাররা পেশাদার অপরাধী কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম।