বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব: মুসল্লিতে পরিপূর্ণ ময়দান
গাজীপুরের টঙ্গীতে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ৫৬তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) ফজর নামাজের পর থেকেই মাওলানা সা’দ কান্ধলবি অনুসারী মুসল্লিদের ইজতেমা শুরু হয়। মূলত মঙ্গলবার রাত থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসতে থাকেন। বিশেষ করে বিপুল সংখ্যক বিদেশি মুসল্লি বুধবার রাত থেকে ময়দানে এসে অবস্থান নেন। এবারের ইজতেমায় বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১০ হাজার মুসল্লি অংশ নেবেন বলে জানিয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ।
পাকিস্তানের মাওলানা ওসমান ফজর নামাজের পর থেকেই আগত মুসল্লিদের উদ্দেশে আম বয়ান শুরু করেন। তাৎক্ষণিকভাবে সেটি বাংলায় তর্জমা করেন জিয়াবিন কাশিম। এদিকে জুমার নামাজে অংশ নিতে উত্তরা, টঙ্গী, গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকা থেকে মুসল্লিরা দলে দলে ময়দানের দিকে যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাস, ট্রাক, পিকআপভ্যান ও ট্রেনে করে সকাল থেকেই ইজতেমার ময়দানে আসছেন মুসল্লিরা। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে ময়দান।
বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম জানান, জুমার নামাজ পরিচালনা করবেন মাওলানা সাদ কান্ধলভির বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভি।
এর আগে বুধবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করেন তাবলীগের শীর্ষ মুরুব্বি মাওলানা সা’দ কান্ধলবির ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলবি, মাওলানা সাঈদ কান্ধলবি, মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলবি এবং তার মেয়ের জামাতা মাওলানা হাসান।
বিশ্ব ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম তাদের আগমনের বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, বর্তমানে তারা বিদেশি তাবুতে অবস্থান করছেন। আখেরি মোনাজাত ও জুমার নামাজ পরিচালনা করবেন মাওলানা সাদ কান্ধলভির বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভি।
তিনি আরও জানান, জুমার পর বয়ান করবেন ওয়াসিফুল ইসলাম। বাদ আসর নিজামউদ্দিন মারকাজের মাওলানা সাঈদ বিন সা’দ বয়ান করবেন এবং তার তরজমায় থাকবেন মুফতি আজিমুদ্দিন। মাগরিব বাদ মাওলানা ইউসুফ বিন সা’দ এবং তা বাংলায় তরজমা করবেন মাওলানা ইউসুফ। রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেছেন, বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বেও ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে পুরো বিশ্ব ইজতেমাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রথম পর্বে যেসব নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছিল এবারও ঠিক আগের মতোই নিরাপত্তা ব্যবস্থা অটুট থাকবে।
পুলিশ কমিশনার বলেন, বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরো ইজতেমা ময়দানকে কয়েকটি সেক্টরে ভাগ করে নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ময়দানের আশপাশে সাত হাজার ৫৩৯ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে ইউনিফর্ম ডিউটি, স্থির পিকেট ডিউটি, ফুট প্যাট্রল ডিউটি, মোবাইল ডিউটি, ওয়াচ টাওয়ার, রুফটপ ডিউটি। এছাড়াও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি, সিসিটিভি সার্ভিল্যান্স, এরিয়া সার্ভিল্যান্স, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ), ডিবি, কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি), ফায়ার সার্ভিস, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, নৌ-প্যাট্রল টিম, ফরেনসিক টিম, সাইবার প্যাট্রলিং, এলআইসি, পিএইচকিউ, এপিসি, জলকামান, মেডিকেল টিম, অ্যাম্বুলেন্স টিম, অনুসন্ধান ডেস্ক, হারানো ও প্রাপ্তি কক্ষ, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ও মোবাইল কোর্ট দায়িত্ব পালন করবে।