ডিবির তদন্ত প্রতিবেদনে নারাজি ফারদিনের বাবার

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৬:৫২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩

বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিনকে ঢাকায় খুন করা হয়েছে: ধারণা করছে ডিবি। সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ (২৪) হত্যা মামলায় তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরার অব্যাহতি চেয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে নারাজি (অনাস্থা) দিতে সময়ের আবেদন করেছেন মামলার বাদী ও নিহতের বাবা কাজী নুরউদ্দিন রানা।

মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো: শান্ত ইসলাম মল্লিকের আদালতে সময়ের আবেদন করলে তা মঞ্জুর করে আগামী ১৬ মার্চ মামলার পরবর্তী তারিখ রাখেন।

এদিন আদালতে বুশরার অব্যাহতি চেয়ে ডিবি পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রিপোর্ট) বিষয়ে শুনানি জন্য দিন ধার্য ছিলো। কিন্তু বাদীর আইনজীবী নারাজি দেওয়ার জন্য সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১৬ মার্চ দিন ধার্য করেছেন।

আজ আমাতুল্লাহ বুশরা আদালতে হাজিরা দেন। তার পক্ষে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ধার্য তারিখ পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেছেন।

বুশরার আইনজীবী এ কে এম হাবিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ০৬ ফেব্রুয়ারি রামপুরা থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় এই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার।

Nagad

এর আগে গত ০৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের রামপুরা থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখায় এই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তিনি বলেন, “ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন, তাকে কেউ হত্যা করেনি।”

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “আমি ভিডিও ফুটেজ, তদন্ত, ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা রিপোর্ট, ঘটনার স্থান এবং অন্যান্য স্থান থেকে নেওয়া বিভিন্ন প্রমাণ পরীক্ষা করে দেখেছি যে, ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন। তাই বুশরা ও মামলায় উল্লেখিত অন্যরা হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন না।”

ফারদিনের বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা বলেন, “আমার ছেলে কখনো আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত করেননি। তাই পরবর্তী নির্ধারিত তারিখে আমি তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে অনাস্থা আবেদন করব।”

নিহত ফারদিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বিজনেস পত্রিকা ‘দ্য রিভারাইন’র সম্পাদক ও প্রকাশক। তিনি দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছেন। ফারদিনের মা ফারহানা ইয়াসমিন গৃহিণী। তাদের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলার নয়ামাটিতে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ০৪ নভেম্বর রাজধানীর ডেমরা থেকে নিখোঁজ হন বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ। পরে ০৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সদরের সিদ্ধিরগঞ্জ বনানী ঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের লাশ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ।

এই ঘটনায় ১০ নভেম্বর ফারদিনের বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরা’সহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগে রামপুরা থানায় মামলা করেন ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা। একই দিনে তাকে গ্রেপ্তার এবং পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরপর গত ০৮ জানুয়ারি ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখার তার জামিন দেন। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য রয়েছে।

সারাদিন/১৪ ফেব্রুয়ারি/এমবি