কালবৈশাখী ঝড়ের পূর্বাভাস

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:২৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ১১, ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত

আগামী সপ্তাহে কালবৈশাখীর আশঙ্কায় রয়েছে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে একাধিক জেলায়। আগামী বুধবার ও বৃহস্পতিবার কালবৈশাখী হতে পারে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর এই খবর জানান।

শনিবার (১১ মার্চ) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এছাড়া কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ ফেসবুকে জানান, আগামী ১৫ মার্চ থেকে ১৯ মার্চের মধ্যে বাংলাদেশে শক্তিশালী কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।

আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তা গণেশ কুমার দাশ হিন্দুস্তান টাইমস’কে জানান, উত্তর প্রদেশ থেকে মহারাষ্ট্র পর্যন্ত একটি গভীর অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে। তাই বিহার, ছত্তিশগড়ের দিকে আবহাওয়া সংক্রান্ত কিছু গতিবিধি ধরা পড়ছে, যা ধীরে-ধীরে পশ্চিমবঙ্গের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জনিয়েছে, শনিবার (১১ মার্চ) পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের কয়েকটি জায়গায় বজ্রসহ বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদের কয়েকটি জায়গায় ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। তবে শনিবার কলকাতায় বৃষ্টির সম্ভাবনা কার্যত নেই বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, শনিবার কলকাতা-সহ উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে বৃষ্টির সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ যে অক্ষরেখা আছে, তা এতটা নীচে আসবে না। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূমের পর বাংলাদেশের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে শনিবার কলকাতার আকাশ মেঘলা থাকবে। আগামীকাল রোববার থেকে আকাশ পরিষ্কার হবে। তাপমাত্রার তেমন হেরফের হবে না।

Nagad

আবহাওয়া দপ্তর আরও জানানো হয়েছে, আপাতত যেরকম পরিস্থিতি, তাতে আগামী সপ্তাহে বুধবার এবং বৃহস্পতিবার কালবৈশাখী হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলোতেও সম্ভাবনা আছে। পরবর্তীতে আরও নিখুঁতভাবে কালবৈশাখীর পূর্বাভাস দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, শনিবার দার্জিলিং, কালিম্পং ও জলপাইগুড়িতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টি হতে পারে। সোমবার ও মঙ্গলবার আবার দার্জিলিং এবং কালিম্পঙে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ কয়েকটি জায়গায় বর্ষণের সম্ভাবনা আছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রির আশপাশে থাকবে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রির আশপাশে থাকবে বলে ভারতীয় আবহাওয়া অফিস।

এদিকে, কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ শুক্রবার (১০ মার্চ) তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে ১৫ মার্চ থেকে ১৯ মার্চের সম্ভাব্য কালবৈশাখী ঝড়, শিলাবৃষ্টি ও তীব্র বজ্রপাত সম্পর্কে অনেকটা নিশ্চিত হওয়া গেছে।

১৫ মার্চ বিকেলের পর থেকে ১৬ মার্চ সকাল ৮টার মধ্যে ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে কালবৈশাখী ঝড় হওয়ার আশঙ্কা বেশি। ১৬ মার্চ কালবৈশাখী ঝড় বাংলাদেশে প্রবেশ করার আশঙ্কা বেশি খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মধ্য দিয়ে। সম্ভাব্য এই ঝড় ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দিকে অগ্রসর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

১৭ ও ১৮ মার্চ কালবৈশাখী ঝড় বাংলাদেশে প্রবেশ করার আশঙ্কা বেশি রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে, যা পরবর্তীতে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের দিকে অগ্রসর হতে পারে। এই দুইদিন ব্যাপক বজ্রপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে এই দুই দিনে ২০২৩ কালবৈশাখী মৌসুমে বজ্রপাতের কারণে প্রথম মানুষ মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই দুই দিনে সকাল ৯টার পর থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ জেলায় তীব্র বজ্রপাতের আশঙ্কা রয়েছে। রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে এই দুই দিন তীব্র বজ্রপাতের ঝুঁকি, সেই সঙ্গে বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যুর প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।

১৮ ও ১৯ মার্চ বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে কালবৈশাখী ঝড়, শিলাবৃষ্টি ও তীব্র বজ্রপাতের আশঙ্কা রয়েছে। দিনের বেলায় দেশের সব জেলায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিলেট ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে কালবৈশাখীর তীব্রতা সবচেয়ে বেশি হতে পারে।

সারাদিন/১১ মার্চ/এমবি