‘পরিষ্কার করে বলছি এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৬:০৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৭, ২০২৩

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পরিষ্কার করে বলছি এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেই কমিশনারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন সরকার নতুন পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে।

সোমবার (২৭ মার্চ) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা গণসমাবেশে তিনি এমন মন্তব্য করেন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপিঘোষিত ১০ দফা দাবি আদায়ের শপথে মুক্তিযোদ্ধা গণসমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।

মির্জা ফখরুল বলেন, বলা হচ্ছে দেশে অর্থনীতির রোল মডেল হয়েছে, অর্থনীতি নয় অনর্থ নীতি চলছে এর মাধ্যমে দেশ ধ্বংস করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি হচ্ছে আওয়ামী লীগ নেতাদের, আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়ে যাচ্ছে। কলকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একটা কাজ প্রতারণা করা। ২০০৮ সালে ১০ টাকা চালের কথা বলেছে, এখন চালের দাম কত? তারা ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের কথা বলছে, যুদ্ধ নয় বরং আওয়ামী লীগের ব্যর্থতায় তাদের দুর্নীতিতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। তারা বলে, এত উন্নতি চোখে দেখে না অথচ সাধারণ মানুষের পেটের উন্নতি হয়নি।’

নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে সংলাপের নাটক করা হচ্ছে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এখনো এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিইনি। নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা নিয়ে ছাড়া আমরা সংলাপ করবো না।’

বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িতদের সরকার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল।

Nagad

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাকে চিবিয়ে খাচ্ছে। স্বাধীনতা বাংলার মানুষের কাজে লাগছে না। লেবুর হালি ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচের কেজি ৩০০ টাকা’।

তিনি বলেন, ধনী বাংলাদেশকে গরিব বানিয়ে কিছু মানুষ বিদেশে নতুন করে ধনী হওয়ার চেষ্টা করছে। যেদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থাকবে না সেদিন বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে যাবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই বাংলাদেশ আমরা চাইনি; আমরা চেয়েছিলাম একটি সার্বভৌম গণতন্ত্রের বাংলাদেশ, সমৃদ্ধির বাংলাদেশ। আমাদের স্বপ্ন দেখেয়েছিল পূর্বপুরুষেরা- একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ, সমৃদ্ধির বাংলাদেশ, যেখানে সমস্ত মানুষ সাম্যের মধ্যে বাস করবে, ন্যায়বিচারের মধ্যে বাস করবে, মানবিক মর্যাদা নিয়ে বাস করবে, কল্যাণের মধ্যে বাস করবে। দুর্ভাগ্য ৫২ বছর পরেও বলতে হচ্ছে যেই বাংলাদেশের জন্য যুদ্ধ করেছিলাম সেই বাংলাদেশ আমরা পাইনি।’

আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মনে করে তারা একাই দেশটা স্বাধীন করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ যুদ্ধ করে নাই। আজকে দেশকে রক্ষা করার জন্য, জাতিকে রক্ষা করার জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে মুক্তিযোদ্ধারা শপথ নিয়েছে, নতুন প্রজন্ম শপথ নিয়েছে এই সরকারকে অপসারণ না করে তারা ঘরে ফিরে যাবে না’।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সঞ্চালনায় এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, আব্দুল্লাহ আল নোমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, জয়নুল আবেদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব মো. মজিবর রহমান সরোয়ার, সংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ।