ঈদের ৬ দিন ফেরিতে বন্ধ থাকবে সাধারণ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান পারাপার
ঈদের আগের তিন দিন ও পরের তিন দিন মিলিয়ে মোট ছয় দিনে ফেরি দিয়ে সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান পারাপার বন্ধ থাকবে- বলে জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদের যাত্রীসেবা নিয়ে বৈঠক করেছি। ঈদের সম্ভাব্য তারিখ ২২ এপ্রিল। আমরা ১৭ এপ্রিল থেকে ঈদের আগের তিন দিন ও পরের তিন দিন পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া ফেরি দিয়ে সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলাচল বন্ধ থাকবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সচিবালয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ আছে, শিমুলিয়া ঘাট দিয়ে ফেরি চলাচলের একটা দাবি আছে চালকদের- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিমুলিয়ায় ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কাজেই আমরা চেষ্টা করছি। এখানে সেতু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কারণ, শিমুলিয়ায় যদি আমরা চালু করি তাহলে দুবার পদ্মা সেতু ক্রস করতে হবে। সেটা তাদের অনুমতির প্রয়োজন আছে।
তিনি আরও বলেন, দুই নম্বর হচ্ছে আমরা যদি সরাসরি চ্যানেল তৈরি করি সেখানে বিদ্যুৎ বিভাগের একটা অনুমতির প্রয়োজন আছে। সেটা অনুমতি সাপেক্ষে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
শুধু মাওয়া হাইওয়ে না ধীরে ধীরে সব হাইওয়েতে কিন্তু মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এটার গতিসীমাও কিন্তু লিমিট করে দেওয়া হয়েছে’, যোগ করেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও এ ধরনের হাইওয়ের মধ্যে ওভার মোটরসাইকেল চলাচলের কিন্তু ব্যবস্থা নেই। কাজেই এগুলো আমাদের মানতে হবে। এখন দেখা যায় ঢাকা থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে। তার শারীরিক সক্ষমতা, মোটরসাইকেলের সক্ষমতা সবকিছু মিলিয়ে যে কোনো মুহূর্তে একটা বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি চালিয়ে যাচ্ছে তার যদি সচেতনতা না থাকে সরকার তো এগুলো এভোয়েড করতে পারে না। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া। আর নিরাপত্তার জন্য সরকার যে যে পদক্ষেপগুলো নেবে, যতই সমালোচনা হোক সমালোচনার মুখেও মানুষকে রক্ষা ও নিরাপদ রাখার জন্য আমাদেরকে শক্ত হতে হবে।’
নৌপথে চলাচলে মানুষের আগ্রহ এখনো কমেনি জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আগ্রহ আরও বাড়ছে। সে কারণে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। আর বিকেএমই ও বিজিএমইর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছি, তারা ছুটিগুলো পর্যায়ক্রমে দেয়, যাতে নৌপথে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। অতীতে তারা যেভাবে ছুটি দিয়েছে, এবারও তারা যেন সেটি করে। আমাদের নৌপথই কেবল না, রেল ও সড়কপথেও তাতে চাপ কম পড়বে।’
তিনি বলেন, এপ্রিল মাসে কালবৈশাখী ঝড় থাকে। এজন্য নৌ চলাচলের জন্য সংকেত মেনে চলতে হবে। ঢাকা সিটি করপোরেশন, নৌ পুলিশকে আরও সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সদরঘাট এলাকায় বিশেষ করে যখন লঞ্চগুলো আমাদের এখান থেকে ছেড়ে যাবে তখন বড় লঞ্চগুলো ভিড়বে তখন ছোট ছোট নৌযান চলাচল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। এটা কঠোরভাবে দেখছি। সন্ধ্যার পরে কোনো বাল্কহেড চলাচল করবে না। এটা আরও কঠোরভাবে দেখার জন্য সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি।
ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষ যেন নির্বেঘ্নে নৌ সেবা নিতে পারে সেজন্য সবাইকে নিয়ে আলোচনা করেছি। পুরাতন যে লঞ্চ অনেকে সরিয়ে ফেলেছে। আধুনিক লঞ্চ সংযুক্ত হচ্ছে। অনেকেই আশঙ্কা করছিল পদ্মা সেতু হয়ে গেলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ আর নৌপথ ব্যবহার করবে না। কিন্তু কথাটা ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। নৌপথে চলাচলের আগ্রহ কমে যায়নি বরং আগ্রহ বাড়ছে।