বিলুপ্তির পথে বৈ-সা-বি’র বিঝু ফুল, নান্দনিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ জরুরি

লায়ন উজ্জ্বল কান্তি বড়ুয়ালায়ন উজ্জ্বল কান্তি বড়ুয়া
প্রকাশিত: ১২:৫৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০২৩

এক সময় বাংলার মাঠে-পথে-প্রান্তরে ভরপুর ছিল বিঝু ফুলে। প্রকৃতির চিরাচরিত নিয়মে চৈত্র মাসেই দেখা মিলে বিঝু ফুলের। বিভিন্ন সম্প্রদায় চৈত্র সংক্রান্তি ও বৈ-সা-বি উদযাপনে ‘ফুল বিঝু’র দিন ‘বিঝু’ ফুল দিয়ে ঘর সাজাতেন নান্দনিক সাজে। তবে ‘বিঝু’ ফুল না পেলে অন্য যে কোন ফুল দিয়েই ঘর সাজানো হতো। বিঝু ফুলকে চাকমারা বলে ‘ভাত জোড়া ফুল’, ত্রিপুরারা ‘কুমুইবোবা’, মার্মারা ‘চাইগ্রাইটেং’ সাওতালরা ‘পাতাবাহা’ আর বাঙ্গালিরা বলে ‘ভিউফুল’।

কেউ কেউ এটাকে বোমারাজা কেউবা ঔষধের রাজা কেউবা ক্যামুছুই পাইং (বাঘের মোচের ফুল) হিসেবেও চিনে। বর্তমান সময়ে বিঝু ফুল আর তেমন একটা দেখা যায়না। এ নিয়ে পাহাড়ি সম্প্রদায়ের অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিঝুর সময় এ ফুল পানিতে ভাসিয়ে কেউ কেউ গোসল করে। সুঁই আর সুতো দিয়ে গাঁথা হতো বিঝু ফুলের মালা।

বিঝু ফুলের গাঁথা মালায় ঘ্রাণ নিলে রোগ বালাই থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের সাথে আলাপে জানা যায় এক সময় নদী ও পুকুরে ফুল ভাসিয়ে ফুল বিঝু পালন করা হত। সেসব দিনের মজার মজার স্মৃতিগুলো বর্তমান সময়ে শুধুই স্মৃতি হয়ে রইল। বর্তমানে মন চাইলেও তা করা যাচ্ছে না বলে জানা যায়। ফুলগুলো এখন আর তেমন পাওয়া যায়না।

অবাধে বন উজাড় আর পাহাড় কাটার ফলে এসব গাছের মূলসহ উপড়ে ফেলা হচ্ছে। ফলে ভবিয্যতে এ ফুল পাওয়া কষ্ট সাধ্য হবে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এ ফুলগুলো চিনবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ আছে। ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি ধরে রাখার জন্য বিঝু ফুল সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।