দুই বছর ধরে চলছে শতাধিক নারীর ব্যক্তিগত ভিডিও ধারণ

ঝিনাইদাহ প্রতিনিধি:ঝিনাইদাহ প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ৯:০১ পূর্বাহ্ণ, মে ৩, ২০২৩

গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় ধারণ করা হচ্ছে নারীদের ভিডিও । খোলা জানালার ফাক দিয়ে বা পর্দা সরিয়ে ঘুমে অচেতন বাড়ীর বৌ-মেয়েদের ভিডিও করছে কে বা কারা নিয়মিত । ঘটনা জানাজানি হলে ঝিনাইদহের শৈলকুপার শাপখোলা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য। এ ঘটনায় এলাকার সকলেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। এ ধরণের অনৈতিক কাজের দ্রুত সুরাহা চান গ্রামবাসী ।

সাপখোলা গ্রামের মোঃ ফেরদৌস জানান, গত ঈদের দিন রাতে (২২ এপ্রিল) তিনি মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত সাড়ে ৩ টার দিকে তার ঘুম ভেঙে যায় ঘরে আলো দেখে । তিনি দেখেন ঘরের বাল্ব বন্ধ আছে । এরপর তিনি লক্ষ্য করেন, জানালা ফাঁক দিয়ে মোবাইলে ছবি তোলার চেষ্ট চলছে। তখন তিনি সজাগ হয়ে যান। এসময় আলোকে লক্ষ করে আঘাত করেন ফেরদৌস, সেসময় ওই যুবকের হাত থেকে মোবাইল পড়ে যায়। আঘাত দেওয়ার পর হাত ধরতে গেলে মুহূর্তে হাত ছাড়িয়ে নিয়ে মোবাইল ফেলে পালিয়ে যায় ওই যুবক।

তিনি আরো জানান, যুবকের ফেলে যাওয়া মোবাইল ঘেঁটে দেখা যায় সাপখোলা থেকে পশ্চিম সাপখোলা, আশুরহাট ও বাগড়ি গ্রামের ১৫০জন নারীর ঘুমন্ত অবস্থায় আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করা।

ঝিনাইদহ জেলা সাইবার ক্রাইম ইনভেষ্টিগেশন সেলের প্রধান ইন্সপেক্টর শরীফুল ইসলাম জানান, আমাদের কাছে গ্রামবাসী মোবাইল জমা দিয়েছে। এ ব্যাপারে খুব জোরালোবাবে কাজ করা হচ্ছে । খুব শীঘ্রই আপনাদের ভালো খবর দিতে পারবো বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি ।

তিনি আরো জানান, মোবাইলে এ ধরনের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছাড়া আর কোন কিছু পাওয়া যায়নি ।

সরোজমিনে যেয়ে ওই এলাকার একাধিক নারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দুই বছর ধরে এ ঘটনা ঘটছে। নারীরা ঘুমিয়ে পড়লে তাদের ঘুমন্ত অবস্থার বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও করতো কে বা কারা । এমনকি জানালা দিয়ে শরীর স্পর্শ করা হত। কখনো পাটকাঠি দিয়ে নারীদের শরীরে খোঁচা দেওয়া হত। কেউ ধরতে গেলে মুহূর্তে পালিয়ে যায় তারা।

Nagad

ঐ গ্রামের যুবক নিশাদ হোসেন জানান, আতঙ্কে দিন পার করছে তারা । নারী পুরুষ কেউ ঘুমাতে পারেনা।

শৈলকুপা নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সাপখোলা গ্রামের মেম্বার টিটো মিয়া জানান, আমরা মোবাইল ফোনটি শৈলকুপা থানাকে দিতে যায় তখন তারা বলেন এ বিষয়ে কাজ করে সাইবার ক্রাইম ইনভেষ্টিগেশন সেল । তখন তাদেরকে ফোনটি দেওয়া হয়েছে । এখন আমরা এর একটা সুরাহা চাই ।

শৈলকুপা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরাও এ ব্যাপারে কাজ করছি । তবে থানায় কোন মামলা হয়নি । বিষয়টি খুবই সেনসিটিভ । ঘটনাটি খুবই আপত্তিকর।