রণক্ষেত্র পাকিস্তান, নিহত বেড়ে ৮-সেনাবাহিনী বলছে কালো অধ্যায়

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:১০ পূর্বাহ্ণ, মে ১১, ২০২৩

দুর্নীতির মামলায় গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ইমরান খানের গ্রেপ্তার পরবর্তী সহিংসতা বেড়েই চলেছে। এতে এখন পর্যন্ত ৮ জন নিহত এবং ২৯০ জনের মতো আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে পুলিশ। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।

এদিকে সহিংসতার ঘটনাগুলোকে ‘কালো অধ্যায়’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। ওই সহিংসতায় বিক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা সেনাবাহিনীর সম্পত্তি এবং স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল।

সেনাবাহিনীর মিডিয়া উইং ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্স (আইএসপিআর) গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা কাউকে আইন হাতে নিতে দেব না, ৯ মে একটি ‘‘কালো অধ্যায়’’ হিসেবে স্মরণ করা হবে।’

এদিকে ইমরান খানকে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে ৮ দিন মঞ্জুর করেছে আদালত। এতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে পিটিআই কর্মীদের সংঘাত আরও তীব্র হয়েছে। বুধবার (১০ মে) চলমান বিক্ষোভের দ্বিতীয় দিনে পাকিস্তান জুড়ে কমপক্ষে ৮ জন নিহত হয়েছে।

বিবিসি প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে থেকে ইমরান খান গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাকিস্তানের অনেক এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। বিক্ষুব্ধ জনতা সামরিক সম্পত্তিতে হামলার পর কঠোর সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এক বিক্ষোভকারী বলেন, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমরা প্রতিবাদ চালিয়ে যাব বা যতক্ষণ না তারা ইমরান খানকে মুক্ত করে। অন্যথায় আমরা সারাদেশ অচল করে দেব।

এদিকে পুলিশ ও পিটিআই সমর্থকদের দিনভর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশ স্টেশন, রেডিও পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি সরকারি স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পিটিআই নেতারা অভিযোগ করে বলেছে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে পুলিশ গুলি ছুড়ছে। এতে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান এই সংঘাতময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাঞ্জাব, খাইবার পাখতুন খোয়া ও ইসলামাবাদে সামরিক বাহিনী তলব করা হয়েছে। এরই মধ্যে ইসলামাবাদ, পাঞ্জাব ও পেশোয়ারে রাস্তায় মোতায়েন সেনাসদস্যদের দেখা গেছে।

Nagad

এদিকে গভীর রাতে পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আসাদ ওমরকে গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টা পর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফাওয়াদ চৌধুরীকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এদিকে বুধবার শাহ মেহমুদ কোরেশির আটক নিয়ে নানা নাটকীয়তা দেখা দেয়। শুরুতে গণমাধ্যমগুলো তার গ্রেপ্তারের সংবাদ দিলেও পিটিআই তা অস্বীকার করে। এক টুইটবার্তায় কুরেশির আটকের বিষয়টি এবার খোদ পিটিআই-ই জানিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাকে গ্রেপ্তারের পর অজানা স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, এই দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। তবে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে আজীবনের জন্য প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচনে দাঁড়াতে অযোগ্য হতে পারেন তিনি। চলতি বছরের শেষের দিকে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।