সরকারকেই হতে হবে সেই অভাগা ব্যক্তির তদবিরকারক: তৈমূর আলম

নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতানারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ৭:৪৭ অপরাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার ইছাখালী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মোতালেব ১৯৭৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর খুন হন। ওই ঘটনায় করা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় মুইরাবো গ্রামের বাসিন্দা জহিরুল হকের।

১৯৮৬ সালের ২৩ আগস্ট তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ ইব্রাহিম আলী মামলার রায় ঘোষণা করেন। ১৬ বছর পর ২০০৪ সালের ১১ এপ্রিল জহিরুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় ও দুই সন্তান শিশু হওয়ায় জহিরুল কোন জেলখানায় ছিলেন সে সম্পর্কে পরিবারের লোকজন কোনো খোঁজ নিতে পারেনি। এমন বিড়ম্বনায় পড়ে সাজার বিরুদ্ধে আপিলও করতে পারেনি পরিবার। এর মধ্যে কারাগারে কেটে গেছে দুই দশক।

জহিরুলের সন্তানরা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর এক বছর আগে আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার এসোসিয়েটের শরণাপন্ন হয়। কিন্তু মামলা সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি পরিবারের লোকজন। এরপর তৈমূর আলম খন্দকার এসোসিয়েট বিষয়টি নিয়ে তল্লাশি শুরু করে গাজীপুর জেলা কারাগারে জহিরুলের থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।

অন্য আসামির আপিল নিষ্পত্তির জন্য মামলার মূল নথি হাইকোর্টের মহাফেজ খানা থেকে তল্লাশি করে নথি বের করেন। নথি থেকে দেখা যায় আইনের বিধান অনুযায়ী আপিল করার জন্য নির্ধারিত সময়সীমার চেয়ে ১৩ হাজার ২৪৯ দিন বিলম্ব হয়েছে।

আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার আপিলে ১৩ হাজার ২৪৯ দিন বিলম্ব মওকুফ করার জন্য তমাদি আইনের ৫ ধারা মোতাবেক হাইকোর্টে আবেদন করেন। এরপর ১৩ হাজার ২৪৯ দিন বিলম্ব কেন মওকুফ করা হবে না মর্মে সরকার ও জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জের ওপর চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে হাইকোর্ট রুল জারি করেন।

Nagad

গত ১২ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল শুনানি করে বিলম্ব মওকুফ করে আপিলটি (আপিল নং-২৮৬৯/২০২৩) গ্রহণ করেন। এরপর গত ১০ মে বিচারপতি মো. হাবিবুল গণি এবং বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি গ্রহণ করে জহিরুল হককে এক বছরের জন্য অন্তবর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। এখন তার জামিনে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার।

আদালতে বিনা পারিশ্রমিতে মামলাটি পরিচালনা করেছেন আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার। তাকে সহায়তা করেন ব্যারিস্টার মার-ই-য়াম খন্দকার এবং ব্যারিস্টার মো. মনোয়ার হোসেন।

আইনজীবী তৈমূর আলম বলেন, অর্থ ও তদবিরের অভাবে আসামি আপিল না করতে পারার কারণে দিনের পর দিন কারাভোগ করছে। অনুরূপ ছোট খাট অপরাধের অভিযোগে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে বিনা বিচারে অনেকে কারাগারে আটক রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি সাজাপ্রাপ্ত যেসব আসামি অর্থের অভাবে বা তদবিরকারকের অভাবে আপিল করতে পারে না বা বিনা বিচারে দীর্ঘদিন কারাভোগ করছে তাদের সরকারি খরচে আইন সহায়তা প্রদানের জন্য সরকারের একটি নির্দিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত টিম থাকা প্রয়োজন।

তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, সরকারকেই হতে হবে সেই সংশ্লিষ্ট অভাগা ব্যক্তির তদবিরকারক। এ বিষয়ে পার্লামেন্টে আইন পাস করার দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া বিনা তদবিরে দীর্ঘদিন আটক রয়েছে এমন কারাভোগীদের জন্য তৈমূর আলম খন্দকার এসোসিয়েট বিনা পারিশ্রমিক আইনি লড়াই চালাবে বলে জানান তিনি।

সারাদিন/১৩ মে/এমবি