‘তখনকার আর এখনকার সুনেরাহর মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত’

সম্প্রতি চিত্রনায়ক শরিফুল রাজ, চিত্রনায়িকা সুনেরাহ বিনতে কামাল ও অভিনেত্রী তানজিন তিশার ছবি ও ভিডিও ফাঁস হয়েছে। এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছেন অভিনেত্রী সুনেরাহ। পর পরই প্রকাশ্যে আসে রাজ-পরীমনি দম্পতির ব্যক্তিজীবনের নানা বিষয়। তাদের সংসারজীবন এখন ‘বিচ্ছেদ’র পর্যায়ে।

ছবি ও ভিডিও ফাঁসের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্ট দেন অভিনেত্রী সুনেরাহ। তবে সেখানে ভিডিওগুলো প্রসঙ্গে খুব একটা কথা না বললেও অভিযোগের আঙ্গুল তুলেন শরিফুল রাজের স্ত্রী পরীমনির দিকে।

অবশেষে প্রকাশিত ‘গোপন’ ভিডিও ও ছবিগুলোর জন্য ক্ষমা চাইলেই অভিনেত্রী সুনেরাহ। তিনি বলেন, “ভিডিওতে যে ধরনের শব্দ আমি ব্যবহার করেছি, সেটার কারণে আমি সবার কাছে স্যরি বলতে চাই। আসলে ওই সময়টা আমি খুব চঞ্চল ছিলাম। আমার যারা ফ্রেন্ড তারা বিষয়টি খুব ভালো করেই জানেন। তখন বন্ধুদের সাথে আমি ওইভাবেই মজা করতাম। আর ভিডিওটা আমি নিজেও করিনি। এখানে আসলে খারাপ কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।”

সুনেরাহ আরও বলেন, “আমি আবারও ক্ষমা চাইছি, এই ঘটনার জন্য। সবাইকে অনুরোধ করব, বিষয়টি নিয়ে আর কোনো আলোচনা না করার। তখনকার সুনেরাহ আর এখনকার সুনেরাহর মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাত।”

এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে সুনেরাহ বলেন, “কোনো প্রমাণ ছাড়া ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় আমাকে দোষারোপ করাটা ঠিক হয়নি। আমার জায়গা থেকে যতটুকু ক্লিয়ার করার দরকার ছিল, তা আমি করেছি। কারও প্রতি আমার কোনো ক্ষোভ নেই। তবে যে পরিস্থিতি এখন চলছে, সেটা আসলে আমি ডিজার্ভ করি না। এটা নিয়ে কোনো কথাও আর বলতে চাই না।”

এর আগে গত ২৯ মে (সোমবার) দিবাগত মধ্যরাতে নায়িকা পরীমনির স্বামী শরিফুল রাজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বেশ কয়েকটি ছবি-ভিডিও খুব বাজেভাবে প্রকাশ পায়। প্রকাশিত ভিডিও-ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ১৭ মিনিট পরেই মুছে ফেলা হয়। ভিডিওতে অভিনেত্রী সুনেরাহকে অসংলগ্ন ও অশ্লীল ভাষায় কথা বলতে শোনা গেছে। আর এটি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

ছবি ও ভিডিও ফাঁসের ঘটনার পর রাত ৩টা ১০ মিনিটে অভিনেত্রী সুনেরাহ তার সামাজিকমাধ্যমে দীর্ঘ এক পোস্ট দিয়ে ঘটনার বিষয়টি খুলে বলেছেন। তবে সুনেরাহ তার পোস্টে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন শরিফুল রাজের স্ত্রী চিত্রনায়িকা পরীমনির দিকে।

চিত্রনায়িকা সুনেরাহ লিখেছেন, “আমি রাজকে ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চিনি। সে আমার অনেক ভালো বন্ধু ছিল। তবে তার বিয়ের পর থেকে আমাদের প্রায় যোগাযোগই ছিল না। সেদিন একটা ডাবিং স্টুডিওতে আমাদের দেখা হলো। আমরা একসাথে ছ‌বি তুললাম। আমি জানি না, পুরোনো বন্ধুর সাথে একটা ছবি তোলা কী এমন অপরাধের বিষয়! তার স্ত্রী (পরীমনি) কোনো কারণ ছাড়াই এটা নিয়ে পাগলপ্রায় হয়ে গেল। যে ভিডিওগুলো আপনারা দেখেছেন, (শরিফুল রাজের অ্যাকাউন্টে) সেগুলো পাঁচ বছর আগের। ‘ন ডরাই’ সিনেমার সময়ের।”

সুনেরাহ আরও লিখেছেন, “তখন এভাবেই আমরা মজা করতাম, আর প্রতিদিন এভাবে কথা বলার প্র্যাকটিস করতাম। কারণ আমাদেরকে (বিশেষ করে আমাকে) সিনেমার প্রয়োজনে এভাবে গালি দিতে হয়েছে। তাকে (রাজকে) একটি ছবি আমি তখন পাঠিয়েছিলাম, তাকে এটা জানানোর জন্য যে আমি শুটিংয়ে মার খেয়েছি (যেখানে লিয়াকত আমাকে মারে, ন ডরাই সিনেমাটা যারা দেখেছেন, তারা জানবেন), মার খেয়ে কালশিটে পড়ে গিয়েছিল, উঠে দাঁড়াতেও পারছিলাম না। শুটিংয়ে যেতে পারব না এটা জানানোর জন্য ছবিটা পাঠিয়েছিলাম। তবে শুধু তাকে না, পরিচালককেও পাঠিয়েছিলাম।”

সুনেরাহ লিখেছেন, “দয়া করে এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। কারণ আমি নিশ্চিত, ওর (রাজের) আইডি হ্যাকড হয়েছে। আর কে হ্যাক করেছে, সেটা আমরা সবাই জানি, প্রকাশ্যে হইচই করতে যার কোনো কারণ লাগে না (সে-ই করেছে)। এ ভিডিওগুলো যারা ছড়াবে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।”

সারাদিন/০৭ জুন/এমবি