সিরাজগঞ্জে ছড়িয়ে পড়ছে ‘লাম্পি স্কিন’ রোগ, দিশেহারা কৃষক

সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতাসিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ৭:২৯ অপরাহ্ণ, জুন ২০, ২০২৩

ছবি- সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জে গবাদি পশুর শরীরে ‘লাম্পি স্কিন’ (এলএসডি) রোগ দেখা দিয়েছে। রোগটির সুনির্দিষ্ট কোনো প্রতিষেধক না থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক ও গৃহস্থরা।

মঙ্গলবার (২০ জুন) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও রায়গঞ্জ উপজেলায় গরুর শরীরে ‘লাম্পি স্কিন’ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এই দুই উপজেলার অনেক খামারি ও কৃষক ‘লাম্পি স্কিন’ রোগে আক্রান্ত গরু বাধ্য হয়ে খুবই কম দামে স্থানীয় কসাইদের কাছে বিক্রি করছেন। প্রতিনিয়ত এই সংক্রমণ বেড়েই চলেছে।

তাড়াশ উপজেলার তালম পদ্মাপাড়া গ্রামের কৃষক জয়নাল শেখ গণমাধ্যমকে জানান, তার চারটা গরুর মধ্যে একটি বড় গরুর গলার নিচে ফুলে সারা গায়ে ফোসকা বের হয়েছে। গরুটির অবস্থা খুবই খারাপ। শরীর পচে গর্ত হয়ে যাচ্ছে। সাড়ে ৫ হাজার টাকা খরচ করেও সুস্থ হয়নি গরুটি।

রায়গঞ্জ উপজেলার চকনূর গ্রামের জামাত আলী, আবু সাইদ ও মংলা শেখ গণমাধ্যমকে জানান, তাদের প্রত্যেকের একটি করে গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এছাড়া গ্রামের সিংহভাগ বাড়িতে এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে।

তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে গেছেন তালম পদ্মাপাড়া গ্রামের সামাদ আলী। সেখানে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, পশু হাসপাতালে এসেও ঘুরে যাচ্ছি ডাক্তার পাচ্ছি না বলে। এই হাসপাতালে এসে কখনো কাউকে পাওয়া যায় না। এখানে নাকি কোনো ডাক্তার নেই। এ অবস্থায় গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছি। তিনি আরও বলেন, তালমশাহী পাড়ায় দুই দিনে প্রায় প্রতি বাড়ির গরু ‘লাম্পি স্কিন’ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

তাড়াশ উপজেলার পল্লী চিকিৎসক আব্দুল মান্নান গণমাধ্যমকে বলেন, গত এক সপ্তাহ যাবত ‘লাম্পি স্কিন’ রোগের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই কয়েকটি করে এমন রোগে আক্রান্ত গরু দেখছি। তবে এর সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। লক্ষণ দেখে আক্রান্ত পশুকে পেনিসিলিন, এন্টি হিস্টামিন এবং জ্বর হলে প্যারাসিটামল দিলে কিছুটা উপকার পাওয়া যায়।

Nagad

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার গণমাধ্যমকে বলেন, এখন পর্যন্ত ‘লাম্পি স্কিন’ রোগে কোনো গরু আক্রান্ত হয়েছে কিনা জানা নেই। তবে ওইসব এলাকায় খোঁজ নেওয়া হবে। আর এই রোগে আক্রান্ত হলে প্রথমেই অসুস্থ গরুটিকে আলাদা করতে হবে। মশারি টাঙিয়ে রাখতে হবে, যাতে মশা বা মাছি গরুর শরীরে না বসে। কেননা মশা বা মাছি অসুস্থ গরুটিকে কামড় দিয়ে যদি সুস্থ কোনো গরুকে কামড়ায় তাহলে সেটিও অসুস্থ হয়ে পড়বে।

এই রোগের ফলে মূলত গরু খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে। গায়ে গুটি-গুটি ফোড়ার মতো হয়ে পেকে পুঁজ বের হয়। একটি গরু সুস্থ হতে প্রায় দুই মাস সময় লাগে। এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে প্রত্যেক উপজেলায় ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম চলমান আছে বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা।

সারাদিন/২০ জুন/এমবি