দক্ষিণ সিটির অভিযান, ২৩ স্থাপনাকে সাড়ে ৩ লক্ষাধিক টাকা জরিমানা

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৬:৫৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৭, ২০২৩

এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ঢাদসিক) পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ২৩ স্থাপনাকে ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়াও এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে করপোরেশনের আওতাধীন এলাকার ৭৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। পাশাপাশি সচিবালয়সহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়, মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার, কবরস্থান, মার্কেট ইত্যাদি স্থান ও স্থাপনায় আজ এই বিশেষ চিরুনি অভিযানের ব্যাপ্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) করপোরেশনের আওতাধীন কলাবাগান, লেক সার্কাস, মতিঝিল, ফকিরাপুল, লালবাগ, ইমামগঞ্জ, চাম্পাতলী, ওয়ারী, খিলগাঁও, মান্ডা ও ডেমরা এলাকায় এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এক নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মঞ্জুরুল হক ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কলাবাগান ও লেক সার্কাস এলাকায় ৪০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন। আদালত এ সময় ‘এনভয় টাওয়ার’ ও ‘আকাঙ্ক্ষা সবুরন টাওয়ার’ এর বেজমেন্টে মশার লার্ভা পাওয়ায় এনভয় টাওয়ারের সিনিয়র এসিসট্যান্ট ম্যানেজার মো. আব্দুল মজিদকে ১ লক্ষ টাকা এবং আকাঙ্ক্ষা সবুরন টাওয়ার তত্ত্বাবধায়ক মো. সিরাজুল ইসলামকে ১ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড আরোপ ও জরিমানা করেন।

দুই নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম আর সেলিম শাহনেওয়াজ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ৩০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন। আদালত এ সময় ২টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পায় এবং ১টি স্থাপনার সংশ্লিষ্ট মালিকের বিরুদ্ধে ১ মামলায় ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

তিন নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তায়েব-উর-রহমান ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের লালবাগ এলাকায় ৪০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন। আদালত এ সময় মেট্রো প্রোপার্টিজ কর্তৃক নির্মাণাধীন ভবনসহ মোট ৩টি নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পায়। এ সময় মেট্রো প্রোপার্টিজ এর প্রতিনিধিকে ৫০ হাজার এবং বাকী দুটি ভবনের প্রত্যেক প্রতিনিধিকে ২০ হাজার করে সর্বমোট ৯০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আরোপ ও জরিমানা আদায় করেন।

Nagad

চার নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের ইমামগঞ্জ ও চম্পাতলী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ৪টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পান। আদালত এ সময় ৩ মামলায় ১৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

পাঁচ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সফি উল্লাহ ওয়ারী এলাকায় ২৭টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ৩টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ৩ মামলায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

ছয় নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহরিয়ার হক ৭০ ও ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের ডেমরা ও খিলগাঁও এলাকায় ৪৩টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ১টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ১ মামলায় ২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

সাত নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাওসীফ রহমান ৭১ নম্বর ওয়ার্ডের মান্ডা এলাকায় ৪০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ৮টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ৮ মামলায় ২১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

নয় নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব শেখদি এলাকায় ৪২টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ২টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ৩ মামলায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

আজকের অভিযানে সর্বমোট ২৯৯টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়েছে। এ সময় ২৩টি বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ২৩ মামলায় সর্বমোট ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।

সচিবালয়সহ ৩৯ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ৬৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ চিরুনি অভিযান

কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সমন্বয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ সচিবালয়সহ ৩৯ গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্থাপনা এবং ৬৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আজকের অভিযানে এসব স্থান ও স্থাপনা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনা ও চারপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন বোধে সেখানে ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হচ্ছে। এরপর সেসব প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা ও স্থানে লার্ভিসাইডিং এবং এডাল্টিসাইডিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এসব অভিযানে করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যতীত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ, স্কুল কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষকবৃন্দ অংশগ্রহণ করছেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে লিফলেট বিতরণসহ নানাবিধ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন।

এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ অঞ্চল-১ এ ৪টি, অঞ্চল-২ এ ৪টি, অঞ্চল-৩ এ ২১টি, অঞ্চল-৪ এ ৬টি, অঞ্চল-৫ এ ১২টি, অঞ্চল-৬ এ ৩টি, অঞ্চল-৭ এ ৪টি, অঞ্চল-৮ এ ৩টি, অঞ্চল-৯ এ ৬টি এবং অঞ্চল-১০ এ ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা, প্রয়োজন অনুযায়ী ব্লিচিং পাউডার ছিটানো এবং সবশেষে এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়।

এছাড়াও আজ বাংলাদেশ সচিবালয়, পরিবহন পুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব, আইজিগেট ব্যাংক কলোনী, জুরাইন কবরস্থান, মুরাদপুর শিশু কবরস্থান, জর্জ কোর্টের আইনজীবী সমিতি ভবন, সমাজসেবা অধিদপ্তর ভবন-৫, ৩ নম্বর অঞ্চলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ওয়্যারহাউজসহ অনেকগুলো কমিউনিটি সেন্টার, মসজিদ, মার্কেট ইত্যাদি ৩৯ স্থাপনা ও স্থানে বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।