ওয়ালটনের আয়োজনে রাজধানীতে ১০-১২ আগস্ট বসছে ‘এটিএস এক্সপো’
বাংলাদেশের শীর্ষ গ্লোবাল ইলেকট্রনিয়া প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজন করেছে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভাগত কম্পোনেন্টস আছে টেকনোলজি (এটিএস) এক্সপো-২০২৩। রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার হল-১ এ আগামী ১০ আপনা (বৃহস্পতিবার) এই নিয়মে শুরু হবে। চলবে ১২ আগস্ট (শনিবার) পর্যন্ত।
বুধবার (৯ আগস্ট) মেলা প্রাঙ্গনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানায় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
এতেউপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও গোলাম মুর্শেদ, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) ও এটিএন এক্সপোর চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবীর, ডিএমডি ও এটিএস এক্সপো’র কো-চেয়ারম্যান মো. ইউসুফ আলী, ওয়ালটন ফ্রিজের চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিএ) তোফায়েল আহমেদ, ওয়ালটন এসির সিবিও তানভীর রহমান, সিনিয়র ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও এটিএস এক্সপো’র কো-অর্ডিনেটর এ এফ এম না ।
সংবাদ সম্মেলনে ওয়ালটন হাই-টেকের এমডি ও সিইও গোলাম মুর্শেদ জানান, এটিএক্স এক্সপো হবে বাংলাদেশে একক কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রথম আন্তর্জাতিক শিল্পমেলা। এতে একই ছাদের নিচে সমাহার ঘটবে ওয়ালটনের নিজস্ব সর্বাধুনিক ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টে তৈরি আন্তর্জাতিকমানের ৫০ হাজারেরও বেশি ইন্ডাসিয়ান। ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস, সার্ভিসেস এবং টেস্টিং ফ্যাসিলিটিস। এগুলোর অধিকাংশই প্রায় সকল প্রকার শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধাপে প্রধান কাঁচামাল ও কম্পোনেন্টস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
তিনি বলেন, নিজস্ব চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি দেশের অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে আমদানি বিকল্প গুণগতমানের ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়াল কম্পোনেন্টস ও টেস্টিং সলিউশনস সরবরাহ করে আমদানি নির্ভরতা হ্রাসের মাধ্যমে বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় ও দেশীয় শিল্পের ক্ষমতায়নে অবদান রাখতে পারে ওয়ালটন।
তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি শিল্পোেদ্যাক্তা ও ক্রেতাদের নিকট ওয়ালটন উৎপাদিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টসস, টেস্টিং ল্যাব ও ফ্যাসিলিটি তুলে ধরার মাধ্যমে দেশের আমদানি নির্ভরতা হ্রাসের মাধ্যমে বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি রপ্তানি আয় আরো বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ‘অ্যাডভান্সড টেকনোলজি এক্সপো’ আয়োজনের এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওয়ালটনের উৎপাদিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস ও কম্পোনেন্টস কাজে লাগানোর মাধ্যমে দেশের প্রায় সকল প্রকার শিল্প প্রতিষ্ঠান যেন উপকৃত হতে পারে সেজন্য তিনি দেশীয় শিল্পোেদ্যাক্তাদের এটিএস এক্সপো’ পরিদর্শনের জন্য আহবান জানান।
তিনি আরো বলেন, ওয়ালটনের তৈরি পণ্যসামগ্রী ইতোমধ্যে এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার ৪০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এটিএস এক্সপো’র মাধ্যমে বৈশ্বিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল কম্পোনেন্টস ও ম্যাটেরিয়ালস এর বিশাল বাজারে ওয়ালটনের শক্তিশালী অবস্থান তৈরির পথ আরো সুগম হবে বলে তিনি আশাবাদী।
এটিএস এক্সপো’র চেয়ারম্যান ওয়ালটনের ডিএমডি মো. হুমায়ুন কবীর জানান, এই শিল্পমেলায় মোট ২১টি স্টলে পণ্যসহ ইন্ডাস্ট্রিয়াল কম্পোনেন্টস, ম্যাটেরিয়ালস, সার্ভিসেস, টেস্টিং ল্যাব ও ফ্যাসিলিটিস প্রদর্শন করা হবে। প্রদর্শনীর পাশাপাশি এক্সপোতে ১১ আগস্ট (শুক্রবার) ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশীয় শিল্পের ভূমিকা’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রেস কনফারেন্সে জানানো হয়, গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সের ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্টসের পাশাপাশি গড়ে তোলা হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার, নাসদাত ইউটিএসসহ বেশকিছু আন্তর্জাতিকমানের টেস্টিং ল্যাব। নাসদাত-ইউটিএস টেস্টিং ল্যাবটি বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড (বিএবি) কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত। বিএবি’র অ্যাক্রিডিটেশনপ্রাপ্ত টেস্টিং প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে পণ্যের গুণগতম
সম্পর্কে যে রিপোর্ট দেয়া হয় তা ইন্টারন্যাশনাল ল্যাবরেটরি অ্যাক্রিডিটেশন কোঅপারেশন (আইলাক) ও এশিয়া-প্যাসিফিক ল্যাবরেটরি অ্যাক্রিডিটেশন কোঅপারেশন (অ্যাপলাক) এর সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে সরাসরি গ্রহণযোগ্য। তাই নাসদাত-ইউটিএস ল্যাবে পরীক্ষাকৃত পণ্যের টেস্টিং রিপোর্ট বিশ্বের বিভিন্ন দেশের টেস্টিং সরকারি মান যাচাই সংস্থা কর্তৃক সরাসরি গৃহীত হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে নাসদাত ইউটিএস টেস্টিং ল্যাব দেশের অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের উৎপাদিত পণ্যের টেস্টিং সলিউশনসকে আরো সহজতর করবে। এটিএস এক্সপোতে টেস্টিং সলিউশন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস, কম্পোনেন্টস, সার্ভিসেস ও প্রোডাক্ট- এই ৪টি ক্যাটাগরিতে পণ্য প্রদর্শন করা হবে।
টেস্টিং সলিউশনস ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন ধরনের টেস্টিং ফ্যাসিলিটিস প্রদর্শন করা হবে। যেমন: ক্যাবল ও ওয়্যার ল্যাব, নয়েজ টেস্টিং ল্যাব, এলইডি ল্যাব, নাসদাত ইউটিএস, প্রেসিসং ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাবরেটরি, প্রোডাক্ট কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাব, ওয়ালটন সাইন্স রিসার্চ ল্যাব ও ওয়ালটন ম্যাটালারজিক্যাল এনালাইসিস ও রিসার্চ ল্যাব।
মেলায় সার্ভিসেস ক্যাটাগরিতে থাকবে কন্সট্র্যাকশন সার্ভিস, মোল্ড অ্যান্ড ডাই, পাওয়ার প্রেস, রেফ্রিজারেটর ও এসএমটি (সারফেস মাউন্টিং টেকনোলজি)। প্রোডাক্ট ক্যাটাগরিতে প্রদর্শিত হবে ফ্রিজ, টিভি, এয়ার কন্ডিশনার, ফাসেনার, পিসিবি, হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সেস, কেমিক্যাল, মাস্টারব্যাচেস, মোন্ড অ্যান্ড ডাই, আইটি প্রোডাক্ট ইত্যাদি।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যাটেরিয়ালস ও কম্পোনেন্টস ক্যাটাগরিতে দেশের বিভিন্ন ফরওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পখাতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত প্রধান কম্পোনেন্টসগুলো প্রদর্শন করা হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে রেফ্রিজারেটর
কম্পোনেন্টস, এয়ার কন্ডিশনার কম্পোনেন্টস, টেলিভিশন কম্পোনেন্টস, হোম অ্যাপ্লায়েন্স কম্পোনেন্টস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্স কম্পোনেন্টস, লিফট কম্পোনেন্টস, কাস্টিং কম্পোনেন্টস ইত্যাদি। এসব কম্পোনেন্টস ও ম্যাটেরিয়ালস এ্যাগ্রো, অটোমোবাইলস, সিমেন্ট, সিরামিকস, কেমিক্যাল, কসমেটিকস, ডিজিটাল, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক্স, ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্লাস, হেডি-ভেহিক্যালস অ্যান্ড এয়ার কন্ডিশনিং, আইওটি, আইটি, লেদার, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, প্লাস্টিক, প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশনস, গার্মেন্টস, পাইকারি ও ট্রেভিং বিজনেস ইত্যাদি শিল্পখাতে ব্যবহৃত হয়।