ফ্যাসিবাদ কাকে বলে তার জ্বলন্ত প্রমাণ বিএনপি: ওবায়দুল কাদের

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮:২৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৮, ২০২৩

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চায়। আর সন্ত্রাসী দল বিএনপি চায় নির্বাচনকে বাধাগ্রস্থ করতে। কাজেই নিষেধাজ্ঞা আর ভিসানীতি কার ওপর প্রয়োগ হয় তাই দেখা হবে।

আজ শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ফ্যাসিবাদ কাকে বলে তার জ্বলন্ত প্রমাণ বিএনপি। তারা ফ্যাসিবাদ করেছে; আর শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে শৃংখলমুক্ত করেছেন। বিএনপি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, অর্থ পাচার করেছে, গণতন্ত্রকে হত্যা করে ভোট চুরির রাজনীতি শুরু করেছে। বিএনপি গণতন্ত্রের নামের লেবাসধারী ফ্যাসিস্ট। তারাই আন্তর্জাতিক মহলে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত, তাদের বিরুদ্ধেই আমাদের যুদ্ধ।

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশীদের মাথাব্যথা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা ধমক মারে, হুমকি দেয়, এখন আবার ভিসানীতি প্রয়োগ করেছে। অথচ এমন হুমকি বিএনপির বেলায় নেই। কিন্তু নির্বাচনে বাধা দিচ্ছে বিএনপি। ফলে ভিসানীতিতে তারা পড়ে, আমরা না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গরুর হাট গোলাপবাগে বিএনপির কর্মীরা হতাশায় ছিল। এখন সরকারের পদত্যাগ চাওয়ার আন্দোলনে কর্মীদের ২-৫ হাজার টাকা দিয়ে আন্দোলন করাতে ঢাকায় আনা হচ্ছে। তাই তত্ত্বাবধায়ক চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে পাকিস্তানে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

তাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অনেক জায়গায় ছাত্রলীগের কমিটি নেই। অবিলম্বে কমিটি দিতে হবে। ছাত্রলীগে কারা অনুপ্রবেশকারী তাদের চিহ্নিত করে সংগঠনকে সৃজনশীল সংগঠন হিসেবে বজায় রাখতে হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এই বছর ২০-২২টা দেশে নির্বাচন, ইউরোপ আমেরিকার প্রতিনিধিরা ঘুরে ঘুরে শুধু বাংলাদেশে আসছে। সব ছেড়ে সবার নজর বাংলাদেশের ওপর। শেখ হাসিনার বড় দোষ সত্য কথা বলা। ১৫ আগস্টের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী সত্য কথা, বড় বড় সত্য ফাঁস করে দিয়েছেন। তিনি আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না। আমরা অনেকে ভয় করি, নেত্রী কেন এসব বলেন, বিশ্ব মোড়লদের ক্ষেপাচ্ছেন। কিন্তু নেত্রীর কাছে সব খবর আছে। এখানে একটা বড় খেলা আছে। অন্য দেশের গণতন্ত্র নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই।

Nagad

সেতুমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কী বিপদে আমরা আছি, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ইউরোপের নেতাদের আমরা তো দাওয়াত করি না। কোথা থেকে এত মেহমান আসে। ইউরোপ-আমেরিকার মেহমান না বলে চলে আসে। আসতে চান আমাদের বলেন, আমরা আদর যত্ন করে রাখব। কী জানতে চান বলেন, প্রয়োজনে আমাদের জনগণের সঙ্গে কথা বলেন। আপনারা কথা বলেন, ধমক মারেন, নিষেধাজ্ঞা দেন, ধমক দেন, এখন আবার ভিসানীতি দেন। কিন্তু এই হুমকি বিএনপির ব্যাপারে কেন বলেন না। ওখানে কি ভিসানীতি নেই?

আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনাদের তো মূল কথা নির্বাচনে যে বাধা দেবে, তার বিরুদ্ধে ভিসানীতি। এই কাজ তো বিএনপি করছে। আমরা তো করছি না। আমরা তো নির্বাচন চাই, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। নির্বাচনের আগে পরে শান্তি চাই। যারা নির্বাচনের নামে আগুন সন্ত্রাসের পরিকল্পনা করবে, আমরাও দেখব এই নিষেধাজ্ঞার মানে কী, এই ভিসানীতি কার বিরুদ্ধে প্রয়োগ হবে।

মন্ত্রী বলেন, কানাডার আদালত বিএনপিকে পাঁচবার সন্ত্রাসী বলেছে। বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিদেশেও চিহ্নিত। এই টেরোরিস্টদের সঙ্গে আমাদের যুদ্ধ। আরেকটা মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ। আসুন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ভোট দেব। স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের পতাকাকে উড্ডীন করব।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতার লিবিং লিগ্যাসি হিসেবে এই জনপদ যতদিন থাকবে তার নাম প্রতিধ্বনিত হবে। এটা বোধহয় সৃষ্টিকর্তার অমর সৃষ্টি। এই দেশের সবচেয়ে বড় সৃষ্টি, বঙ্গবন্ধুর মুখ নিঃসৃত শব্দ মুক্তি আর স্বাধীনতা। স্বাধীনতার লিগ্যাসি বঙ্গবন্ধুর নামেই উচ্চারিত হবে। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম এটাও তার লিগ্যাসি, এটা বহন করছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাসের এই লিগ্যাসি আরও পরিষ্কার হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত।