বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ কমাতে আসছে ‘জাতীয় ডেবিট কার্ড’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৬:৪৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩

বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছরের ১ নভেম্বর থেকে জাতীয় ডেবিট কার্ড চালু করতে যাচ্ছে। মূলত বিদেশি কার্ড প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা হ্রাস ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ কমাতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর)গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক।

জানা গেছে, বিদেশি কার্ড প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণে এই জাতীয় ডেবিট কার্ড চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ব্যাংকে এই কার্ড চালুর বিষয়ে পাইলটিং করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, প্রাথমিকভাবে ৮টি ব্যাংক নিয়ে পাইলটিং কার্যক্রম করা হচ্ছে। জাতীয় পর্যায়ে এই কার্ড ব্যবহার হলে গ্রাহকের খরচ কমবে। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক একটি কার্ডের জন্য যেসব সেবা দেবে, তা সাশ্রয়ী হবে। তখন আন্তর্জাতিক কার্ড স্কিমগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা হবে। এখন আন্তর্জাতিক কার্ড স্কিমগুলো যা নির্ধারণ করে দেয়, তা-ই মানতে হয়।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য এ কার্ড চালু করবে, পরে টাকা-রুপি কার্ড চালু করা হবে।

গত ২ জুন বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ন্যাশনাল ডেবিট কার্ড চালুর উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

Nagad

তিনি বলেন, আমাদের দেশে ভিসা, মাস্টারকার্ড বা বাইরের কোম্পানিগুলোর ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ড আছে। আমাদের নিজস্ব কোনো কার্ড ছিলো না। এগুলোর ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা ছিলো। তাছাড়া, সংশ্লিষ্ট ফি বাইরে চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, আমরা জাতীয় ডেবিট কার্ড তৈরি করছি। সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এক কার্ড ব্যবহার করবে। এটার প্রচলন হলে আমরা মনে করি টাকার পরিবর্তে এই কার্ডের ব্যবহার বেড়ে যাবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ধারণা করা হচ্ছে- আগামী ১ নভেম্বর জাতীয় ডেবিট কার্ড চালু করা যাবে, তবে এখনও নিশ্চিত নয়। উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ করা হলে জানানো হবে। ইতোমধ্যে এ কার্ড চালুর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পাইলটিং করছে। সোনালি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকও প্রাথমিক পাইলট কার্যক্রমে সহায়তা করছে।

কি করা যাবে এই কার্ড দিয়ে;
বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে যে ডেবিট কার্ড নিয়ে আসা হচ্ছে, এটার নাম দেয়া হয়েছে ‘টাকা পে কার্ড’। এই কার্ড ব্যবহার করে দেশের ভেতরে কেনাকাটা করা যাবে। এটাকে রুপির সঙ্গে যুক্ত করে ফেলব, সেই প্রক্রিয়া চলছে।

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, বাংলাদেশেও এই কার্ড দিয়ে লেনদেন করা যাবে। আবার কেউ ভারতে গেলে ভ্রমণকারীর ১২ হাজার ডলারের যে ভ্রমণ কোটা আছে, সেই পরিমাণ অর্থ তিনি রুপিতে কেনাকাটা করতে পারবেন। ফলে মুদ্রার বিনিময়ের কারণে যে ক্ষতি হতো, সেটা আর হবে না। তাতে দেখা গেছে, ৬ শতাংশের মতো অপচয় কমবে। বাংলাদেশিরা সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করেন ভারতে। এতে অনেক ডলার বাঁচবে।