অর্থপাচারে দেশের অর্থনীতি ফোকলা বা ফাঁপা হয়ে গেছে : ফখরুল

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ২:৪৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৩, ২০২৩

অর্থপাচারে দেশের অর্থনীতি ফোকলা বা ফাঁপা হয়ে গেছে অভিযোগ করে সমাজে ধনবৈষম্য বৃদ্ধির সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি বড় ধরনের সংকেটের দিকে এগোচ্ছে । উন্নয়নের গালগল্প করে দেশকে ঋণের জালে জর্জরিত করে দেউলিয়া করতে যাচ্ছে সরকার। এখন প্রায় ২০ লাখ কোটি টাকা ঋণের বোঝা বইছে দেশ।

শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের অর্থনীতির ভয়ঙ্কর বিপর্যয় হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ালেও দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। শ্রীলংকা এক বছরের মধ্যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে নেতৃত্ব ও সুশাসনের জন্য। অথচ দেশে মূল্যস্ফীতি, রেমিট্যান্স প্রবাহ শোচনীয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের ব্যাংকিং খাতে চরম অব্যবস্থাপনা, লাগামহীন দুর্নীতি এবং অর্থপাচারে দেশের অর্থনীতি ফোকলা বা ফাঁপা হয়ে গেছে।

ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি পুরোপুরি ফাঁপা বা ফোকলা করে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে পুরো সম্পদ তারা লুট করে নিয়ে চলে গেছে। সেই লুটের টাকা বিদেশে পাচার করেছে।

তিনি বলেন, উন্নয়নের নামে আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, আর ঋণ করে ঘি খাওয়ার পরিণতিতে দেশ এখন ঋণের চাকায় পিষ্ট। বেশ কিছুকাল থেকেই তারল্য সংকটে পড়ে দেশের অনেক ব্যাংক ধার করে চলছে।

Nagad

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বেশ কিছুকাল থেকেই তারল্য সংকটে পড়ে দেশের অনেক ব্যাংক ধার করে চলছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংক খাতে অতিরিক্ত তারল্য কমে ৩ হাজার ৯০৯ কোটি টাকায় নেমেছে। এক বছর আগেও যা ২ লাখ ৩ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা ছিল। বিশেষ করে শরিয়াভিত্তিক পরিচালিত পাঁচটি ব্যাংক নিয়মিত সিআরআর রাখতে ব্যর্থ হয়ে জরিমানায় পড়েছে। এ সময়ে নিরাপত্তার কথা ভেবে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা তুলে হাতে রাখছেন অনেকে। কিন্তু তারল্য সংকটে অনেক ব্যাংক আমানতকারির নিজস্ব আমানতের এমনকি ১ লক্ষ টাকার চেকও অনার করতে পারছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকিং সেক্টর থেকে লোন দেওয়া সংকুচিত হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রের অন্য সকল খাতের মত ব্যাংক খাতের প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসনকেও ধ্বংস করেছে তারা।

তিনি বলেন, বর্তমান দুর্নীতিবাজ সরকারের সময় কানাডার বেগমপাড়া, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম, দুবাই, আমেরিকার বিভিন্ন স্টেট ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এবং বেলারুশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ও সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট অনেকে জমি ও বাড়িঘর ক্রয় করে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে। এদিকে দেশের মানুষ আরও গরীব হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব, ভ্রান্তনীতি গ্রহণ, নীতির সমন্বয়হীনতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির অভাব এবং সর্বোপরি লাগামহীন দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ সংকট থেকে বের হতে পারছে না। তাই, দেশবাসীর কাছে আহ্বান- আসুন বাংলাদেশে একটি সত্যিকার জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি। আর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের অবসান ঘটিয়ে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করি।

গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। এতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম উপস্থিত ছিলেন।