তিন ডেপুটি গভর্নর বাদ দিয়ে মুদ্রানীতি প্রণয়ন কমিটি পুনর্গঠন
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আধুনিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এবার মনিটারি পলিসি কমিটি পুনর্গঠন করা হচ্ছে। আগে শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা এই কমিটিতে ছিলেন। এখন থেকে কমিটিতে বাইরে থেকে আরও তিনজনকে রাখা হবে। নতুন কমিটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব কর্মকর্তা ছাড়াও তিনজন বিশেষজ্ঞ যুক্ত করা হবে। এছাড়া তিন ডেপুটি গভর্নরকে বাদ দিয়ে কমিটির আকারও ছোট করা হচ্ছে।
রোববার (২২ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মুদ্রানীতি প্রণয়ন কমিটিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গভর্নরসহ মুদ্রানীতি বিভাগের ডেপুটি গভর্নর, প্রধান অর্থনীতিবিদ ও নির্বাহী পরিচালক থাকবেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাইরে থেকে কমিটিতে থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক।
তাদের পাশাপাশি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) ভাইস চেয়ারম্যান সাদিক আহমেদ অথবা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেনকে কমিটিতে রাখার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ। এ দু’জনের মধ্যে যাকে পাওয়া যাবে, তাকে মুদ্রানীতি প্রণয়ন কমিটির বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ অনেক দেশে মুদ্রানীতি কমিটিতে বাইরের বিশেষজ্ঞ রাখা হয়। এতে মুদ্রানীতির প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সহজ হয়। এ বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকও মুদ্রানীতি কমিটিতে বাইরের বিশেষজ্ঞ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। সবশেষ গত ১৮ জুন চলতি অর্থবছরের (জুলাই-ডিসেম্বর) প্রথম ছয় মাসের মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন মুদ্রানীতি প্রণয়ণের আগে মুদ্রানীতি পলিসি কমিটি নিজেরা একাধিকবার বৈঠক করে স্বাধীনভাবে উপকরণগুলো ঠিক করে থাকে। এক্ষেত্রে স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেওয়া ছাড়া অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক পরিস্থিতিকে বিবেচনায় নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সোমবার গণমাধ্যমকে বলেন, এতোদিন কমিটিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারাই ছিলেন। কিন্তু মুদ্রানীতিকে আরও কার্যকর করতে বাইরের তিনজন অর্থনীতিবিদকে কমিটিতে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।