ট্রেন দুর্ঘটনা: নিহত ১৬ জনের পরিচয় মিলল, মরদেহ হস্তান্তর

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১:৫০ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২৩

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৭ জনের মধ্যে ১৬ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এরমধ্যে একই পরিবারের চারজন রয়েছে।বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ জানান, ১৬টি মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে রাতেই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) দিনগত রাতে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ১৫ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক। তাদের মধ্যে ২০ জনকে ঢাকায়, ৪০ জনকে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম ও কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ১২ জনকে অন্যান্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এখন পর্যন্ত যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে, তারা হলেন- ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সুজন মিয়া (৩৫), তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৩০), তাদের দুই ছেলে সজীব মিয়া (১৪) ও ইসমাইল মিয়া (১০), কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার দড়িগাঁও গ্রামের আছির উদ্দিন (৩০), মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের রাসেল মিয়া (২১), চানপুর গ্রামের সাইমন মিয়া (২৬), ভৈরব পৌর শহরের টিনপট্টি এলাকার বাসিন্দা সুবোধ শীল (৪৫), ভৈরব পোস্ট অফিসের সহকারী পোস্ট মাস্টার হুমায়ুন কবির জাহাঙ্গীর (৫৫), ভৈরব যুব উন্নয়ন কার্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ জালাল আহমেদ, ঢাকা কলেজের ছাত্র ভৈরবের রাধানগর গ্রামের আফজাল হোসেন (২৩), ভৈরব পৌর শহরের রানীরবাজারের সবুজ চন্দ্র শীল (৫০), ভৈরব উপজেলার শ্রীনগরের রাব্বি মিয়া, ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার মেরেঙ্গা গ্রামের হোসনা আক্তার, কুলিয়ারচর উপজেলার লক্ষ্মীপুর এলাকার ইমারুল কবীর (২২) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বরইছড়া এলাকার নিজাম উদ্দিন সরকার।

এদিকে দুর্ঘটনার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রেলপথে ট্রেন চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ভৈরব রেলওয়ে জংশনের মাস্টার মো. ইউসুফ মিয়া।

এ প্রসঙ্গে কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, ইতোমধ্যে ১৫ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। একজনের নাম পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। যার কারণে তার মরদেহ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর বাকি একজনের মরদেহ ঘটনাস্থল থেকেই তার পরিবারের লোকজন নিয়ে গেছেন।

Nagad

এদিকে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ১৭ জনের মধ্যে ১৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে পিবিআই। ঘটনার পর থেকে প্রত্যেক মরদেহের পরিচয় জানতে কাজ শুরু করে কিশোরগঞ্জের পিবিআই এর একটি দল।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) দিনগত রাত ১২টা পর্যন্ত ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে তারা।

কিশোরগঞ্জ পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. সাজ্জাদ রুমন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরব জংশনের কাছাকাছি জগন্নাথপুর এলাকায় এগারোসিন্দুর ও চট্টগ্রামগামী মালবাহী ট্রেনের মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ১৭ জন নিহত হন। নিহত ১৬ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে একজনের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি। আহতের বেশির ভাগই প্রথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বেশ কয়েকজনকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মালবাহী ট্রেনটি সিগন্যাল অমান্য করায় ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় ট্রেনটির চালক, সহকারী চালক ও পরিচালককে (গার্ড) সাময়িক বরখাস্ত করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।