পাকিস্তানের বিপক্ষে দাপুটে জয় বাঘীনিদের
দেশের মাটিতে প্রথমবার পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দলকে টি-টোয়েন্টিতে হারানোর স্বাদ পেল বাংলাদেশ। নাহিদা আক্তারের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের পর অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির অপরাজিত ২৬ রানে ভর করে পাক নারীদের ৫ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিকরা।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নাহিদার স্পিন জাদুতে পাকিস্তানকে মাত্র ৮২ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। জবাবে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির অপরাজিত ২৬ রানে ৫ উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে টিম টাইগ্রেসরা। বিশ্বকাপে সময়টা মোটেই ভাল যাচ্ছেনা বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের। দুই দলই শুরুটা করেছিল জয় দিয়ে। তবে টুর্নামেন্টের মাঝপথে খেই হারিয়েছে। টাইগাররা হেরেছে টানা ৪ ম্যাচ।


আর টানা তিন পরাজয় সঙ্গী হয়েছে বাবর আজমদের। তবে এই দলের ক্রিকেট ভক্তদের মধ্যে বাংলাদেশই বরং কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে। মেয়েদের ক্রিকেটে দুই দলের লড়াইয়ে জয়টা যে পেয়েছে বাংলার মেয়েরাই। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে নেমেছিল বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দল। প্রথমে ব্যাট করে ৮২ রান সংগ্রহ করেছিল পাকিস্তান নারী দল। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৯.৩ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় নিগার সুলতানা জ্যোতিরা। ব্যাট হাতে এদিন দলের জয়ে বড় ভ‚মিকা রেখেছিলেন অধিনায়ক জ্যোতি। ৮৩ রানের লক্ষ্যমাত্রায় বাংলাদেশের শুরুটা ছিল সাবধানী। শামিমা সুলতানা এবং মুরশিদার ওপেনিং জুটি থেকে এসেছে ১২ রান। ৯ বলে ৫ রান করা শামিমা ফিরেছেন রান আউটের ফাঁদে পড়ে। মুরশিদা এরপর জুটি গড়েন সোবহানা মোস্তারির সঙ্গে। দুজনেই খেলেছেন ধীরগতির ইনিংস। মুরশিদার কাছ থেকে এসেছে ৪০ বলে ২৩ রানের ইনিংস। সোবহানার করেছেন ২৫ বলে ১৬ রান। তাদের এমন ধীরগতির খেলায় চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। দশম ওভারে সোবহানা আউট হলে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। এরপরেই মূলত রানের চাকা ঘুরতে শুরু করে। শেষদিকে স্বর্ণা আক্তার এবং সুলতানা খাতুনের উইকেট হারালে আবারও চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে জ্যোতির কল্যাণে জয় দিয়েই ম্যাচ শেষ করতে সক্ষম হয় টাইগ্রেসরা।
এর আগে, টস জিতে আগে বল করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগ্রেস অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। বল হাতে অধিনায়কের আস্থায় যথাযথ প্রতিদানও দিয়েছে বাংলাদেশ। নাহিদা আক্তারের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সুবাদে পাকিস্তানি মেয়েরা গুটিয়ে গিয়েছে মাত্র ৮২ রানে। বল হাতে পাকিস্তান শিবিরে প্রথম আঘাত করেন নাহিদা সুলতানা। ওপেনার সিদরা আমিনকে সরাসরি বোল্ড করেন তিনি। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে আবারও আঘাত করেন নাহিদা। এবার দারুণ খেলতে থাকা মুনিবা আলীকে সাজঘরে পাঠান তিনি। এরপরেই দলের হাল ধরেন অধিনায়ক নিদা দার এবং অভিজ্ঞ বিসমাহ মারুফ। দুজনের জুটিতে ভর করে ৫০ পার করে পাকিস্তান। ৫৬ থেকে ৬৭ এই নয় রানের মাথায় পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপে তাণ্ডবই চালিয়েছেন রাবেয়া-সুলতানারা।
৫৬ রানে রাবের বলে ফিরে যান নিদা দার। বিসমাহ মারুফই ফেরেন রাবেয়ার রানআউটে। ৫৭ রানে ইরাম জাভেদকে কট এন্ড বোল্ড করেন সুলতানা খাতুন। আলিয়া রাজ আউট হয়েছেন স্বর্ণার বলে। আর নাহিদার তৃতীয় শিকার ছিলেন উম্মে হানি। এরপরেই বাংলাদেশের জন্য মাথাব্যাথার কারণ হয়ে ওঠেন নাটালিয়া পারভিজ। লোয়ার মিডল অর্ডারের এই ব্যাটার এর আগেও টাইগ্রেসদের ভুগিয়েছিলেন। আজও পাকিস্তানের স্কোর বড় করতে ভূমিকা রেখেছেন। তার ১৬ বলে ১৫ পাকিস্তানকে কিছুটা স্বস্তি এনে দেয়। তবে শেষ ওভারে আবারো নাহিদার জোড়া আঘাতে বিধ্বস্ত হয় পাকিস্তান। মাত্র ৮ রান খরচায় ৫ উইকেট তুলে নেন নাহিদা আক্তার। বাংলাদেশের সামনে টার্গেট ৮৩ রানের। যা সহজেই চপকে যায় বাঘিনীরা।