টানেলের পর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যুগে চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: ৬:৩৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০২৩

চট্টগ্রামে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকালে উদ্বোধনের মাধ্যমে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম প্রবেশ করেছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যুগে। এখন চট্টগ্রাম নগরীর কেন্দ্র থেকে বিমানবন্দরের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। যা এখন থেকে খুব সহজেই যাওয়া যাবে। এর আগে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন হয়। তার ঠিক ১৭ দিনের মাথায় এবার নগরীর প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে বন্দরনগরীর মানুষ অনেক দুর্ভোগের লাগব হলো।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী-সিডিএ ফ্লাইওভার’ নামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে আরও ১৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের বহনকারী একটি মিনিবাস পতেঙ্গা বিমানবন্দর প্রান্ত থেকে টাইগার পাস পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করেছে মাত্র ১৫ মিনিটে।

এক্সপ্রেসওয়ের লালখান বাজার থেকে টাইগারপাস অংশের কাজ শেষ না হওয়ায় এটি এখনই খুলে দেওয়া হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত প্রকল্পের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক। তবে, পতেঙ্গা থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত অংশ আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সব ধরনের যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গৃহীত প্রকল্পে নগরীর লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত চট্টগ্রাম ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৬ দশমিট ৫ মিটার প্রশস্ত চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ থাকলেও নানা জটিলতায় কাজ এগুতে না পারায় দুই দফা সময় বৃদ্ধি করে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে।

এক্সপ্রেসওয়ের দুই পাশে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে ১৪টি র‌্যাম্প বসানোর কাজ অবশিষ্ট রেখেই আজ এই প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। র‌্যাম্প ছাড়া উদ্বোধন হলেও চট্টগ্রাম নগরী থেকে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যেই চট্টগ্রাম বিমানবন্দর অথবা পতেঙ্গা পৌঁছাতে পারবে। এছাড়া, বঙ্গবন্ধু টানেলের ভেতর দিয়ে পারাপার হওয়া যানবাহন সমূহও এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে চলাচল করতে পারবে। তবে র‌্যাম্প চালু না হওয়ায় নগরীর টাইগারপাস থেকে যাত্রা শুরু করে পতেঙ্গার আগে শহরের অন্য কোনো প্রান্তে যানবাহন উঠা-নামা করতে পারবে না।

Nagad

চট্টগ্রামে যেসব প্রকল্প উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তবায়ন করা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বাকলিয়া এক্সেস রোড ও ফৌজদারহাট থেকে বায়েজিদ সড়ক পর্যন্ত লিংক রোড, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের ১০টি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদরাসার উন্নয়ন, গণপূর্ত অধিদফতরের করা সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের জন্য বহুতল ভবন ও পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমেটরি ভবন নির্মাণ, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের করা চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭টি অবকাঠামো স্থাপন ও কমিউনিটি ক্লিনিক।

এছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৮০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ, সমাজসেবা অধিদফতরের জেলা সমাজসেবা কমপ্লেক্স নির্মাণ, গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের মহেশখালী জিরো পয়েন্ট (কালাদিয়ার চর) থেকে সিটিএমএস (ধলঘাট পাড়া) গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ, মহেশখালী-আনোয়ারা গ্যাস সঞ্চালন সমান্তরাল পাইপলাই নির্মাণ, আনোয়ারা-ফৌজদারহাট গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ ও চট্টগ্রাম-ফেনী-বাখরাবাদ গ্যাস সঞ্চালন সমান্তরাল পাইপলাইন নির্মাণ এবং কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের করা মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ ও কেজিডিসিএল গ্যাস বিতরণ নেটওয়ার্ক আপগ্রেডেশন প্রকল্প।

এছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্যেগে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে মুরালী খালের ওপর ১২১ মিটার দীর্ঘ ভেলালাপাড়া সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।