‘জরুরি স্বাস্থ্যসেবায় ৫০০টি সরকারি স্বাস্থ্য ইউনিটে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস শুরু’
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, “দেশে এখনো ৬৫ হাজার শিশু এবং সাড়ে ৪ হাজার মা বছরে মাতৃত্বকালীন মারা যায়। এই সংখ্যা অনেক। যদিও গত বছরের তুলনায় এবার আমরা অন্তত ৫ ভাগ মা ও শিশু মৃত্যু হার কমাতে সক্ষম হয়েছি। তবে মা ও শিশু মৃত্যু হার বিগত বিএনপি-জামাত সরকারের তুলনায় এখন অর্ধেকের বেশি কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। তবুও এখনো বছরে এত মৃত্যু কোনভাবেই কাম্য নয়।
তিনি বলেন-এখন আমাদের আগামীর লক্ষ্য পুরণ করতে হবে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যু হার ৭০ শতাংশ কমাতে হবে ও শিশু মৃত্যুহার অর্ধেকে নামিয়ে আনতে হবে। তবে, এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করতে হবে, মায়েদের হোম ডেলিভারির পরিবর্তে প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির দিকে মনোযোগী হতে হবে এবং সরকারি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র সমূহকে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস ব্যবস্থায় কাজ করতে হবে। মা ও শিশু মৃত্যুহার কমিয়ে আনতে আমরা ইতোমধ্যেই ৫০০টি সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে ৪০০টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই ২৪ ঘন্টা সেবা চালু করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব কনভেনশন হলে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ কর্তৃক ৯-১৪ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত “পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহ” পালন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, এমপি।
বর্তমানে প্রাইভেট স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে আশংকাজনক হারে সিজারিয়ান ব্যবস্থা বেড়ে গেছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসময় বলেন, “দেশে এখন সিজার করে বাচ্চা নেবার হার আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিনা কারণেই অনেক মায়েরাও সিজার করে বাচ্চা নিতে আগ্রহী থাকেন। এটি কাম্য নয়।
একবার সিজার করে বাচ্চা নিলে ঐ মায়ের পরবর্তীতে বাচ্চা ডেলিভারিতে সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও সারা জীবনের জন্য অন্যান্য সমস্যা নিয়ে চলতে হতে পারে। এটি এভাবে চলতে পারে না। দেশে হোম ডেলিভারি এবং সিজার করে বাচ্চা নেয়া অর্ধেকের বেশি কমাতে আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আগামী ৯-১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ এর ৬ দিন ব্যাপি পরিবার কল্যান সেবা ও প্রচার সপ্তাহের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্য, অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ, মহাপরিচালক শিক্ষা প্রফেসর টিটু মিয়া, মহাপরিচালক নার্সিং, মহাপরিচালক নিপোর্ট এবং UNFPA- এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি মিস ক্রিস্টিাইন ব্লোকস সহ আরো অনেকে। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু এনডিসি। সভায় জুম অনলাইনে দেশের ৮০টি উপজেলা হাসপাতাল স্বাস্থ্য প্রতিনিধি যুক্ত ছিলেন।