বিএনপির একাদশ দফার অবরোধ সহ নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক:নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশিত: ৪:১৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০২৩

১২ ও ১৩ ডিসেম্বর অবরোধ ডেকেছে বিএনপি। একাদশ দফার এ অবরোধ আগামী মঙ্গলবার সকাল ৬টায় শুরু হয়ে শেষ হবে বুধবার সন্ধ্যা ছয়টায়।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আগামী ১৪ নভেম্বর সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এদিন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সব কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হবে।

গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল দেয় বিএনপি। এরপর দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন এবং দলের গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তি ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে এক-দুই দিন পরপর কখনো অবরোধ, কখনো হরতালের মতো কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে দলটি।

বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলও একই ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছে। সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, তাদের আন্দোলনের কর্মসূচি চলতেই থাকবে।

রিজভী অভিযোগ করেন, আগামী ৭ জানুয়ারির নির্বাচন তাদের মতো করে করার জন্য চেষ্টা করছে সরকার। এর অংশ হিসেবে গণহারের খেয়ালখুশি মতো গ্রেপ্তার চলছে। নানা নিপীড়ন চলছে। রিজভী বলেন, এসবের কারণ একটাই, ভোটারদের মনে ভয় ধরানো। এ সরকারের ভোটারের দরকার নেই।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ বিরোধী মতকে সহ্য করে না। তাই আজ ঢাকা ও দেশের অন্যত্র মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাধা ও কর্মীদের অকারণে নির্যাতন চালায় সরকারের নানা বাহিনী।

Nagad

একই সঙ্গে ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহিদদের প্রতি পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন। সাভার থেকে ফিরে একইদিন শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) মাজার জিয়ারত করা হবে। এ ছাড়া, দিবসটি উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে আলোচনা সভা, কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সব কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, আজকে সরকার ভেবেছিল হামলা মামলা ও গ্রেপ্তারে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে স্তব্ধ করে দেবে। উল্টো জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বুক চিতিয়ে অংশগ্রহণ করেছে। তারা সমস্ত ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সারাদেশে মানবাধিকার দিবসে মানববন্ধনে জড়ো হয়েছে।

রিজভী বলেন, আজ রোববার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধনে পুলিশ হবিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে অনেককে আহত করেছে। শুধু তাই নয়, তারা সারাদেশে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিচ্ছে। নেতাকর্মীদের আর্তনাদে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। সরকার শুধু দ্বিতীয় বাকশাল কায়েম করতে চায়।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ পণ্ড ও নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ২৯ অক্টোবর সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। এরপর থেকে মঙ্গলবার, শুক্রবার ও শনিবার ব্যতীত দফায় দফায় হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি করে যাচ্ছে দলটি। এদিকে ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, ২৮ অক্টোবর থেকে ৮ ডিসেম্বর ভোর ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে ২৬৩টি যানবাহন আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১৬২টি বাস ও ১৫টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৪৪টি ট্রাক, ২৩টি কাভার্ডভ্যান, ৮টি মোটরসাইকেল ও অন্যান্য ২৩টি বাহন রয়েছে।