আজ ড. ওয়াজেদ মিয়ার ৮২তম জন্মবার্ষিকী

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:০১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৪

দেশ বরেণ্য পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৮২তম জন্মবার্ষিকী আজ। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ জামাতা। ১৯৪২ সালের এই দিনে (১৬ ফেব্রুয়ারি) তিনি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার লালদীঘির ফতেহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

এ উপলক্ষে পীরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন, পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, এম.এ ওয়াজেদ ফাউন্ডেশন এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। যার মধ্যে রয়েছে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, স্মৃতিচারণ, ফাতেহাপাঠ, মিলাদ মাহফিল, গরীবদের মাঝে খাবার বিতরণ।

শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে প্রয়াত বিজ্ঞানীর বাসভবন লালদীঘির ফতেহপুরের জয়সদন, উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ও উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এসব কর্মসূচি পালিত হবে।

সকালে বিজ্ঞানীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মধ্যদিয়ে দিনের কর্মসূচির সূচনা হবে। সকালে জয় সদন প্রাঙ্গণে দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা, তবারক বিতরণ, বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্মৃতিচারণ ও উপজেলা জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত, বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে স্মৃতিচারণ দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়াও জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে গোপিনাথপুর হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানায় কোরআন খতম ও শিক্ষার্থীদের উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে।

উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ৮২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় উপস্থিত থাকবেন পীরগঞ্জ আসনের এমপি ও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

Nagad

ওয়াজেদ মিয়া ১৯৫৬ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৮ সালে রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। তিনি ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে এমএসসি পাস করেন। ১৯৬৭ সালে লন্ডনের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৬১-৬২ শিক্ষা বছরের জন্য হল ছাত্রসংসদের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলনে গ্রেপ্তার হন। ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিল তিনি তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে যোগ দেন। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষা বছরে তিনি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’ কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেন।

ওয়াজেদ মিয়া ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর স্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দীর্ঘ সাত বছর নির্বাসিত জীবন কাটান। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার মতোই তিনিও ’৭৫-পরবর্তী সামরিক শাসকগোষ্ঠীর দ্বারা বিভিন্নভাবে নিপীড়নের শিকার হন। ২০০৯ সালের ৯ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর তাঁর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী পীরগঞ্জ উপজেলার ফতেহপুর গ্রামে তাঁর মা-বাবার কবরের পাশে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।

প্রয়াত এই বিজ্ঞানী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের পদার্থবিজ্ঞান, ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও প্রকৌশলের ছাত্রদের জন্য দুটি গ্রন্থ রচনা করেন।

তাঁর লেখা ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ’ শিরোনামের গ্রন্থটি ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে এবং ‘বাংলাদেশের রাজনীতি ও সরকারের চালচিত্র’ নামের আরেকটি গ্রন্থ ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড থেকে প্রকাশিত হয়।

আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রাণপুরুষ, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণুবিজ্ঞানী হিসেবে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিজ্ঞান গবেষণার জন্য দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ বিজ্ঞানাগার এম এ ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।