ঝিনাইদহে রেকর্ড পরিমাণ গমের আবাদ

ঝিনাইদহে ২০১৬ সালে গমে ব্লাস্ট দেখা দিলে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৩ বছর গম আবাদে নিরুৎসাহিত করা হয় কৃষকদের। কিন্তু ব্লাস্ট প্রতিরোধ জাত উদ্ভাবনের পর গম আবাদ বাড়তে থাকে জেলায়। চলতি মৌসুমে গেল এক দশকের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ গমের আবাদ হয়েছে। গম আবাদ বৃদ্ধির জন্য ৫ হাজার কৃষকের বিনামূল্যে বীজ সার প্রণোদনা দেয়া হয়েছিল। এবছর অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ঝিনাইদহে ৫ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৫৭ হেক্টর বেশি। যেখানে সদর উপজেলায় ৭৯০ হেক্টর, কালীগঞ্জে ৩২০, কোটচাঁদপুরে ১৩০, মহেশপুরে ৮২০, শৈলকূপায় ২’ হাজার ৮৬০ এবং হরিনাকুন্ডু ৩১০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। শৈলকুপায় সবচেয়ে বেশি এবং কোটচাঁদপুর উপজেলায় কম পরিমাণে গম আবাদ হয়েছে। এ পরিমাণ আবাদ থেকে ২১ হাজার ১২৯ দশমিক ২ মেট্রিক টন গম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। কোন কোন কৃষকের গম আবাদে ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে দেখা যাচ্ছে। আর কিছু দিন পরই গম কাটা শুরু হবে। গত মৌসুমে ‘ হাজার ১৩৫ হেক্টর এবং ২০২২ মৌসুমে ৪ হাজার ২৭৮ হেক্টর জমিতে গম আবাদ হয়েছিল।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা মধুহাটি ইউনিয়নের বড়বাড়ি গ্রামের গম চাষি আব্দুল্লাহ বলেন, গম আবাদে খরচের তুলনায় লাভ বেশি। একবিঘা জমিতে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়। সাধারণত ১৫ থেকে ১৬ মন উৎপাদন হয়ে থাকে। বিক্রি করতে কোন ঝামেলা নেই।

কৃষি বিভাগ জানায়, রবি মৌসুমে গম ফসলে খরচের তুলনায় লাভ বেশি। কার্তিকের শেষ হতে অগ্রহায়ণের তৃতীয় সপ্তাহ ( ইংরেজি নভেম্বর দ্বিতীয় সপ্তাহ হতে ডিসেম্বর প্রথম সপ্তাহ) গম বীজ ছিটানোর উপযুক্ত সময়। উঁচু ও মাঝারি দো- আশ মাটিতে গম আবাদ ভালো হয়। মাটির ধরন বুঝে ২ থেকে ৩ টা সেচ লাগতে পারে। বর্তমান বারি- ৩৩, বারি- ৩০, বারি- ৩২ উন্নত মানের গম-বীজ।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নূর-এ – নবী বলেন, এবছর গম আবাদের জন্য অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ করছে। এখন পর্যন্ত গমে অবস্থা দেখে ভালো ফলনের আশা করা যাচ্ছে। তাছাড়া উন্নত মানের ফলনের গম বীজ উদ্ভাবন হয়েছে। বিশেষ করে বারি- ৩৩ জাত ব্লাস্ট প্রতিরোধী, বারী- ৩০ থেকে ৩২ পর্যন্ত ব্লাস্ট প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। এসকল জাতে ৬০ থেকে ৬৪ দিনে গমে শীষ দেখা যায়। ১১২ দিন জীবনকাল এবং জিংক সমৃদ্ধ ও কান্ডশক্ত হওয়ায় সহজে হেলে পড়েনা। সবমিলিয়ে এবছর গমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষি বিভাগ।

Nagad