ঢাবিতে আতঙ্ক, হল ছাড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষ-হামলার ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে। সেই আতঙ্কে অনেকেই হল ছেড়ে যাচ্ছেন। সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ছাড়তে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময়, তাদের চোখে-মুখে ছিলো আতঙ্কের ছাপ লক্ষ করা গেছে। তবে আতঙ্কে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলতে রাজি হননি কোনো শিক্ষার্থী।
বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল থেকে বিজয় একাত্তর হল, রোকেয়া হল, কবি জসীম উদ্দিন হল, মাস্টার দা সূর্যসেন হলসহ প্রায় সব হল থেকেই শিক্ষার্থীদের অনেকেই বেরিয়ে যাচ্ছেন। তাদের ব্যাগ গুছিয়ে হল ছাড়তে দেখা গেছে।


এক শিক্ষার্থী গণমাধ্যমকে বলেন, আমি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এসেছি পড়াশোনা করবো সেজন্য। আমার রাজনীতি বা কোটা আন্দোলন কোনোটার সাথে সংশ্লিষ্টতা নেই। হলে থাকার কারণে ছাত্রলীগের মিছিলে যেতে হয় বাধ্য হয়ে। কিন্তু আজ যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে আর সাহস পাচ্ছি না হলে থাকার। আমার বাড়িতে দুপুরে পর এপর্যন্ত বিশ জন কল দিয়েছে বাড়ি ফিরে যেতে। তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। ক্লাস শুরু হলে আসবো। তবে হলে হয়তো আর ওঠা হবে না।
এর আগে, মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ এবং হল ত্যাগের নির্দেশনা দেয় ইউজিসি। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল-কলেজও। বৃহস্পতিবারের এইচএসসি পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে, রক্তক্ষয়ী একটি দিন দেখে, দেশবাসী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে, মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়। শিক্ষার্থীদের অবরোধে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে রাজধানী। ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, রংপুর, বরিশালে ছাত্রলীগ ও পুলিশের সাথে দফায়-দফায় সংঘর্ষে জড়ায় শিক্ষার্থীরা। এতে কমপক্ষে ৬ জন নিহত হয়েছে।
নিহতদের স্মরণে আজ, রাজু ভাস্কর্যের সামনে, পড়ানো হবে গায়েবানা জানাজা। এরপর, কফিন মিছিল করবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। নিরাপত্তা বজায় রাখতে; ঢাকা-চটগ্রামসহ ৬ জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি।
এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মাইক নিয়ে প্রতিটি হলের মাঠে গিয়ে ‘কারো রাজনৈতিক চালের বলি না হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন’। তাদের বলতে শোনা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীরা, আপনার দেশ ও জাতির ভবিষ্যতে। আপনাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ আপনাদের হাতে। আপনারা ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেবেন। কারো রাজনৈতিক চালের বলি হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব আপনার।