বাংলাদেশি মাছ ধরার ট্রলারে মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলি, নিহত ১, গুলিবিদ্ধ ৩
বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশি ফিশিং ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি করেছে মিয়ানমার নৌবাহিনী। এতে এক জেলে নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও তিনজন। এ ছাড়া ৬০ মাঝিমাল্লাসহ ৬টি ফিশিং ট্রলার অপহরণ করে মিয়ানমারে নিয়ে গেছে বলে জানা যায়।
নিহত জেলের নাম ওসমান গনি, পিতা- বাঁচা মিয়া, সাং- কোনাপাড়া, শাহপরীরদ্বীপ, সাবরাং। আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। হতাহতরা সবাই শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়ার সাইফুল কোম্পানির মালিকানাধীন ট্রলারের জেলে বলে জানা গেছে।


কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ট্রলার মালিকরা জানিয়েছেন, বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমের মৌলভির শিল নামে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় এ ঘটনা ঘটে।
অপহরণ করা ৬টি ট্রলারের মালিকরা হলেন- শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রীপাড়ার মুসলিম মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান, মৃত আলী হোছনের ছেলে আবদুল্লাহ, তার ভাই আতাউল্লাহ এবং উত্তরপাড়ার ছৈয়দ মাঝির ছেলে মো. আছেম। ট্রলারগুলোয় ৬০ জন মাঝিমাল্লা রয়েছেন।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, বুধবার বিকেল আড়াইটার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও মিয়ানমারের মধ্যবর্তী বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশে বাংলাদেশের মাছ ধরার নৌকায় মিয়ানমারের নৌবাহিনী গুলি করে এবং ৬টি ট্রলার ও ৬০ জন জেলেকে আটক করে। গুলির ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন এবং দুজন আহত হয়েছে। পরে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় মিয়ানমার নৌবাহিনী বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের নিকট ১টি নৌকাসহ জেলেদের হস্তান্তর করে। বর্তমানে কোস্টগার্ডের তত্ত্বাবধানে ১টি নৌকাসহ মৃত ব্যক্তির মরদেহ ও ১১ জন জেলে নিয়ে কিছুক্ষণ আগে শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে অবতরণ করেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ অন্যান্য ৫টি বোটসহ অন্য জেলেদের ছাড়েনি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ট্রলার মালিক সাইফুল জানান, বুধবার সাগরে মাছ ধরার সময় হঠাৎ মিয়ানমার নৌবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এতে তার ট্রলারের ৩ জন গুলিবিদ্ধ হন এবং এদের মধ্যে একজন মারা যান। পরে নৌবাহিনীর সদস্যরা ৬ ট্রলারসহ সবাইকে আটক করে। তবে বৃহস্পতিবার একটি ট্রলার, নিহত ও আহতসহ ১১ জনকে ছেড়ে দেয়। মিয়ানমার নৌবাহিনীর কাছে ৫ ট্রলারসহ অন্যান্য বাংলাদেশি জেলেরা এখনও আটক আছেন।
এ ব্যাপারে বিজিবির টেকনাফস্থ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, সেন্টমার্টিনের অদূরে বঙ্গোপসাগরে মিয়ানমারের সীমান্তে নৌবাহিনীর গুলিতে একজন নিহত এবং আরও দুইজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এ ঘটনায় বিস্তারিত খেঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী জানান, সেন্টমার্টিনের কাছে মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে এক বাংলাদেশি জেলে নিহত ও দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আটক জেলেদের মধ্যে ১১ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তারা ইতোমধ্যে শাহপরীর দ্বীপে এসে পৌঁছেছেন। তবে ৫টি ট্রলারসহ অন্য জেলেরা এখনও আটক আছেন।