বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ঝুঁকি নিয়ে বিশেষ সতর্কবার্তা
সাত দিনের মধ্যে দুইবার ভূমিকম্পে কেঁপেছে দেশ। গত ৯০ দিনে বাংলাদেশের আশপাশে মৃদু ও তীব্র মাত্রার ৫০টির বেশি ভূমিকম্প হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এসব ছোট-বড় ভূমিকম্প আসন্ন বড় মাত্রার ভূমিকম্পের পূর্বাভাস হতে পারে।
বিশ্বের ভূমিকম্পের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি শহরের তালিকায় রয়েছে ঢাকা। বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর এবং চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞের শঙ্কা রয়েছে।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান বলেছেন, “৭ মাত্রার ভূমিকম্প সীমান্ত এলাকায় হলে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষতি হবে, বিশেষত ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ব্যাপক ক্ষতির কারণ হবে।”
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী উল্লেখ করেন, “বাংলাদেশের আশপাশ দিয়ে তিনটি টেকটোনিক প্লেট গেছে। এগুলোর মুভমেন্টের কারণে যে কোনো সময় বড় ভূমিকম্প হতে পারে। প্লেটগুলো দীর্ঘদিন শক্তি সঞ্চয় করছে, যা ৮ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের কারণ হতে পারে।”
এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাড়ে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকায় প্রায় ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়বে। যেখানে তৈরি হবে সাত কোটি টন কংক্রিটের স্তূপ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে অবিলম্বে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন মেরামত ও গ্যাস-বিদ্যুতের অপরিকল্পিত লাইন সংস্কার করতে হবে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কাছে আধুনিক সরঞ্জাম থাকলেও, ভবনগুলোর দুর্বল অবস্থা বড় ক্ষতির ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন, বড় ধরনের ভূমিকম্পের আগেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।