বিদেশি বিনিয়োগ ও প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়ানোর আহ্বান বাণিজ্য উপদেষ্টার
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, মেলার অবয়ব ও সক্ষমতার মধ্যে সমন্বয় নেই, এবং বিদেশি উদ্যোক্তারা কেবল মনোহারী পণ্য নিয়েই আসেন, যা আন্তর্জাতিক মানের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য যথেষ্ট নয়।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত বাণিজ্যমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


অনুষ্ঠানে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. আবদুর রহিম খান এবং এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের চিন্তার ব্যাপ্তি আরও বাড়াতে হবে। আমরা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা বললেও বাস্তবে ততটা আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ নেই। যারা আসেন, তারা মূলত গৃহস্থালি ও মনোহারী পণ্য নিয়ে আসেন। এটি পরিবর্তন করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “ব্যবসার ব্যয় কমাতে হবে, পণ্যের বৈচিত্র্য আনতে হবে এবং প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে হবে। তা না হলে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা কঠিন হয়ে পড়বে এবং দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষায় সমস্যা দেখা দেবে।”
এবারের মেলায় দেশি-বিদেশি ৩৪৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়ার ১১টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩০৪, যার মধ্যে ৫টি দেশের ৯টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল।
এবারের মেলায় প্রথমবারের মতো অনলাইনে স্টল বরাদ্দ ও টিকিট ক্রয়ের সুবিধা চালু করা হয়। দর্শনার্থীদের জন্য বিআরটিসির ডেডিকেটেড বাস সার্ভিসের পাশাপাশি উবার ও পাঠাও-র কনসেশন রেট চালু করা হয়।
এছাড়া, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সম্মান জানাতে তৈরি করা হয় জুলাই চত্বর ও ছত্রিশ চত্বর। তরুণদের রপ্তানি বাণিজ্যে উদ্বুদ্ধ করতে ইউথ প্যাভিলিয়ন ও বিভিন্ন সেমিনার আয়োজন করা হয়।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “আগামী ৩০তম বাণিজ্যমেলাকে আরও স্বচ্ছ ও দৃষ্টিনন্দন করতে হবে। বিদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য আরও আকর্ষণীয় পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যাতে তারা শুধুমাত্র মনোহারী পণ্যের গণ্ডি পেরিয়ে মূলধারার শিল্পে বিনিয়োগের সুযোগ খোঁজেন।”
১৯৯৫ সাল থেকে আয়োজিত ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা দেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ও সামষ্টিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। তবে আন্তর্জাতিক মানের মেলা হিসেবে পরিচিতি পেতে আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।