শিল্পখাতকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে স্থানান্তরের আহ্বান রিজওয়ানা হাসানের
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাংলাদেশের শিল্পখাতকে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য ও টেকসই জ্বালানির দিকে স্থানান্তরের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জ্বালানি সরবরাহের ঘাটতির কারণে শিল্পখাত সংকটে পড়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদি টেকসই সমাধানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে নেদারল্যান্ডস দূতাবাস আয়োজিত সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরাম (SAF) ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, শুধু গ্রিন ফ্যাক্টরি থাকা মানেই শিল্পখাত টেকসইভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। পোশাক শিল্প অত্যন্ত জ্বালানিনির্ভর, পানিনির্ভর এবং রাসায়নিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সংবেদনশীল। তাই দায়িত্বশীল উৎপাদন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতেই হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, শিল্পাঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে, যা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ কারণে সরকার শিল্পখাতে পানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে চার্জ আরোপ এবং পুনঃব্যবহারের জন্য বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
পরিবেশ উপদেষ্টা জানান, সরকার জার্মানির সহায়তায় ‘কেমিক্যাল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট রুল’ প্রণয়ন করছে, যা শিগগিরই চূড়ান্ত হবে। একই সঙ্গে তিনি জাতীয় রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়নের ওপর জোর দেন, যা পরিবেশ ও শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
তিনি আরও বলেন, “সস্তা শ্রম” শব্দটি আমাদের শিল্পখাতে থাকা উচিত নয়। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে উৎপাদক ও ভোক্তা উভয়েরই সমান দায়বদ্ধতা থাকতে হবে। তিনি নৈতিকভাবে সোর্সিং ও ন্যায়সঙ্গত ব্যবসার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান ও প্রযুক্তি সরবরাহকারীদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আহ্বান জানান, যাতে পোশাক খাত টেকসই ও দায়িত্বশীলভাবে পরিচালিত হয়।
তিনি বলেন, “আমরা দায়িত্বশীল অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চাই, যা নতুন টেকসই মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করবে।”
অনুষ্ঠানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রে কারস্টেনস এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (BIDA) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বক্তব্য রাখেন।