জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচনের পরিবেশ নষ্টের ষড়যন্ত্র চলছে: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জাতীয় ঐক্য ও নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল-সংলগ্ন মাঠে বিএনপির বর্ধিত সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই মন্তব্য করেন।
এসময় তারেক রহমান সকলকে ঐক্য এবং নির্বাচনের পরিবেশ নষ্টের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সংস্কার এবং স্থানীয় নির্বাচনের কথা বলে জনগণের সামনে ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে।


তিনি আরও বলেন, দেশের পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনও অন্তর্বর্তী সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসেনি। কিছু উপদেষ্টার বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যের কারণে স্বাধীনতাকামী মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। আর দেশের পরিস্থিতি এমন, যেখানে খুন-খারাবি চলছে এবং সরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন গতির প্রতি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারছে না সরকার। এসব কারণে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করছে বলে জনগণ মনে করছে।
তারেক রহমান অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ ও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হবে এবং নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। বিএনপি এই ফাঁদে পা দেবে না।
তিনি বিএনপির সকল স্তরের নেতাকর্মীদেরকে ঐক্য বজায় রাখতে এবং বিভেদ সৃষ্টি না হওয়ার জন্য সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জনরায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে গণহত্যাকারী-মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করবে।
বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান ও হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সদস্য, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সকল কর্মকর্তা ও সদস্যগণ, সকল মহানগর, জেলা, থানা-উপজেলা-পৌর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবরা রয়েছেন।
এর বাইরেও বিএনপির ১১টি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অথবা আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবরা উপস্থিত আছেন। দীর্ঘসময় পর দলের এ আয়োজনে সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা দলে দলে যোগ দিয়েছেন। দলের কাছে নিজেদের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে বক্তব্য দেবেন। সেগুলো আমলে নিয়ে কর্মকৌশল নির্ধারণ করবে বিএনপি।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে বর্ধিত কমিটির সভা হয়। যেখানে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বক্তব্য দেন। এর চারদিন পর ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় কারাবরণ করেন তিনি।