আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ২:৩৫ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৬, ২০২৫

সংগৃহীত ছবি

আজ ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পেরিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতার পথে যাত্রা শুরু করে। এ দিনটি উপলক্ষে দেশজুড়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

স্বাধীনতার ইতিহাস
১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাঙালিদের ওপর অতর্কিত গণহত্যা অভিযান ‘অপারেশন সার্চলাইট’ চালিয়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানজুড়ে যখন নিরীহ, নিরস্ত্র বাঙালিকে নিমর্মভাবে হত্যার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে আর তখনই (২৬ মার্চ) চট্টগ্রামের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। যা তৎকালীন ইপিআরের ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পরে। 

পরে ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই দিনটিকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়।

এর আগে, ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি বেসামরিক লোকদের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সব সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা।  

তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণার পর গর্জে উঠে বাঙালি জাতি। এর ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে একটি ভূখণ্ডের, যার নাম বাংলাদেশ।  

জাতীয় পর্যায়ে কর্মসূচি
দিবসটি উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সকাল ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা হয়।রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর মুক্তিযোদ্ধা, বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্য, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

Nagad

আলোকসজ্জা ও পতাকা উত্তোলন
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাগুলোতে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সংবাদপত্র ও সম্প্রচার মাধ্যমের বিশেষ উদ্যোগ

দিবসটি উপলক্ষে সংবাদপত্রগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। টেলিভিশন ও রেডিও চ্যানেলগুলোতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করা হচ্ছে।

বিভিন্ন কর্মসূচি ও সংবর্ধনা
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন, মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কুচকাওয়াজ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন, হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবার ও বৃদ্ধাশ্রমে বিশেষ খাবার পরিবেশন শিশুপার্ক ও জাদুঘরগুলো সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা, নৌবাহিনীর বিভিন্ন জাহাজ জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।

স্বাধীনতা দিবস কেবল একটি উৎসব নয়, এটি জাতির আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের প্রতীক। এই দিনে মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের স্মরণ করার পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রতিশ্রুতি নেওয়ার সময় এসেছে। জাতির প্রত্যেক সদস্যের উচিত স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করা।