বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’: উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ৪, ২০২৫

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদসহ জাতীয় চার নেতাকে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বীর প্রতীক ফারুক-ই-আজম।

এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “মুজিবনগর সরকারের যারা দায়িত্বে ছিলেন, তারা সবাই মুক্তিযোদ্ধা। তবে ওই সরকারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে গণ্য হবেন।”

এর আগে মঙ্গলবার (৩ জুন) ‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ গেজেট আকারে প্রকাশ করে সরকার। এতে নতুন করে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’—এই দুটি পরিচয়ের সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরাসরি যুদ্ধ করেছেন—এমন ব্যক্তিরাই কেবল ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন। যাঁরা প্রশিক্ষণ নিয়ে অস্ত্র হাতে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়েছেন, তাঁরা এই তালিকায় থাকবেন। অন্যদিকে, যারা যুদ্ধক্ষেত্রে যাননি কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে নানাভাবে অবদান রেখেছেন, তাঁরা হবেন ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’।

তবে সরকার জানিয়েছে, ‘সহযোগী’ পরিচয় সংযুক্ত হলেও তাঁদের রাষ্ট্রীয় সম্মান বা সুযোগ-সুবিধায় কোনো পরিবর্তন আসবে না।

এই বিভাজনের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় বিতর্ক। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন—জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি নিয়ে। তাদের কেউ সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে ছিলেন না বলে অনেকে ধারণা করেন।

Nagad

এমন প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজমের বক্তব্য স্পষ্ট করল বিষয়টি। তাঁর ভাষ্য, “জাতির নেতৃত্ব ও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সরাসরি যুদ্ধ পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন—এ কারণে তাঁরা অবশ্যই ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’।”

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, মুক্তিবাহিনী, ইপিআর, পুলিশ, সেনাবাহিনী, নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্সসহ যাঁরা ফ্রন্টলাইনে ছিলেন, তাঁরা সরাসরি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন। এছাড়া নির্যাতিত নারীরা ‘বীরাঙ্গনা’ হিসেবে এবং ফিল্ড হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সরাও ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ পরিচয় পাবেন।

অন্যদিকে, যারা যুদ্ধ পরিচালনার পেছনে থেকে কূটনৈতিক, সাংস্কৃতিক বা প্রচারমূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন—যেমন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কর্মী, বিদেশি কূটনীতিক, সাংবাদিক, খেলোয়াড়, চিকিৎসক বা প্রশাসনিক কর্মকর্তা—তাঁরা ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে স্বীকৃত হবেন।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস নির্ভুলভাবে তুলে ধরতে এই বিভাজন আনা হয়েছে এবং চূড়ান্ত তালিকা শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।