আয়েশার মৃত্যুতে বাবার আহাজারি: ‘আমার মেয়েটা কী দোষ করেছে?’

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা:চট্টগ্রাম সংবাদদাতা:
প্রকাশিত: ৯:০৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ৬, ২০২৫

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুতে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়ায় শিশুসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বোয়ালখালী অংশে এই দুর্ঘটনা ঘটে। সেতুতে সিগন্যাল অমান্য করে একসঙ্গে ট্রেন ও যানবাহন উঠে পড়ায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন শিশু মেহেরুমা নুর আয়েশা, তার বাবা মো. সাজ্জাদুর নূরের সঙ্গে ছিলেন তিনি। অপর নিহতরা হলেন সিএনজি চালক মোহাম্মদ তুষার এবং এখনো শনাক্ত না হওয়া এক ব্যক্তি। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সন্তান হারিয়ে শোকে বিহ্বল গ্রাফিক ডিজাইনার সাজ্জাদুর নূর বলেন, ‘আমার মেয়েটা কী দোষ করেছে? আমি হয়তো গুনাহ করেছি, কিন্তু আমার দুই বছরের মেয়েটা কী করেছে! সে শুধু পানি খেতে চেয়েছিল, তাই বোতল কিনে দিয়েছিলাম। এখন সব শেষ।’

সাজ্জাদুর জানান, স্ত্রী জুবাইরা ফেরদাউস ইসরাকে নিয়ে তিনি চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাটে বাস করতেন। ঈদ উপলক্ষে গ্রামের বাড়ি বোয়ালখালীর পূর্বগোমদণ্ডী ইউনিয়নে যাচ্ছিলেন। পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।

২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি সাজ্জাদুর ও ইসরার বিয়ে হয়। তাদের একমাত্র সন্তান ছিল আয়েশা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইসরা প্রায়ই মেয়েকে নিয়ে ভালোবাসার বার্তা পোস্ট করতেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সেতুটি একমুখী হওয়ায় ট্রেন চলাচলের সময় যানবাহনের ওঠা নিষিদ্ধ। সিগন্যাল থাকলেও তা উপেক্ষা করে একাধিক অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল সেতুতে উঠে পড়ে। বিপরীত দিক থেকে আসা দ্রুতগামী ট্রেনের ধাক্কায় দুর্ঘটনা ঘটে।

Nagad

গুমদণ্ডী রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশনমাস্টার আজম উদ্দিন বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী ট্রেনকে পূর্ব প্রান্তে দাঁড়িয়ে লাইনম্যানের সংকেত নিয়ে সেতুতে উঠতে হয়। কিন্তু চালক তা মানেননি। ফলে মুখোমুখি সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনা ঘটে।’

ঘটনার পর দুর্ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে এক যুবক রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে কোলে নিয়ে আর্তনাদ করতে দেখা যায়।