খামেনির প্রাণ বাঁচালাম, ধন্যবাদটুকুও দিলো না: ট্রাম্প

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮:০৯ অপরাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২৫

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে ‘লজ্জাজনক মৃত্যুর’ হাত থেকে রক্ষা করলেও তিনি ধন্যবাদ জানাননি— এমন বিস্ফোরক দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সঙ্গে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ইরান যদি পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণে অগ্রসর হয়, তাহলে তিনি আরও বোমা হামলার নির্দেশ দেবেন।

শুক্রবার (২১ জুন) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লিখেন,
“আমি খামেনিকে অত্যন্ত জঘন্য ও অপমানজনক মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলাম, তবে তিনি ধন্যবাদটুকুও দিলেন না।”

ট্রাম্পের এই মন্তব্য ইরানের সর্বোচ্চ নেতার সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের পরেই আসে। সম্প্রতি আয়াতুল্লাহ খামেনি দাবি করেন, ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে ইরান ‘বিজয়’ অর্জন করেছে। তার এই মন্তব্যকে ‘মিথ্যা ও বোকামিপূর্ণ’ বলে আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ট্রাম্প বলেন, ইরানে সামরিক অভিযান চলাকালীন তিনি জানতেন খামেনি কোথায় লুকিয়ে ছিলেন এবং তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা রুখে দিয়েছেন। তিনি আরও দাবি করেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী মিলে খামেনিকে হত্যার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

ট্রাম্পের এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি। এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন—প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি সত্যিই কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে চান, তাহলে তাকে আয়াতুল্লাহ খামেনির প্রতি সম্মান দেখাতে হবে এবং কোটি ভক্তের অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

এর আগে, গত ১৩ জুন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করার লক্ষ্যে দেশটিতে আকস্মিক হামলা চালায় ইসরায়েল। পাল্টা জবাবে ইরানও ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়। যুক্তরাষ্ট্র পরে সরাসরি ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে এই সংঘাত আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

Nagad

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মন্তব্য করেন, “খামেনিকে হত্যা করা হলে মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের অবসান ঘটবে এবং পরমাণু যুদ্ধ বন্ধ হবে।” খামেনিকে কেন্দ্র করে এই ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের শুরু থেকেই তাঁর ওপর হামলা বা হত্যাচেষ্টার নানা পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল।

অবশেষে মার্কিন মধ্যস্থতায় ১২ দিনের মাথায় ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে যুদ্ধ থেমে গেলেও দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা এখনও বিরাজমান, আর সেই উত্তেজনায় নতুন করে ঘি ঢেলেছেন ট্রাম্প।