অনলাইনে ভিডিও এডিটিং প্রশিক্ষণ নিয়েই চাকরি হয় যেখানে

সারাদিন ডেস্কসারাদিন ডেস্ক
প্রকাশিত: ৬:৩৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৫, ২০২১

চাকরির জন্য দীর্ঘ সময় ঘুরে বেড়ানো নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ থেকে পাশ করার পরেও বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সবাই শুধু অভিজ্ঞতা চায়। আমি যদি চাকরি না পাই তাহলে অভিজ্ঞতা হবে কি করে? এমন অনেক প্রশ্ন যখন মাথায় ঘুর-পাক খায়; ঠিক অন্য চিত্র রয়েছে ভিডিও এডিটিংয়ে বাজারে; এখান থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পরপরই পেয়ে যাচ্ছে চাকরি নামক সোনার হরিণটি; শুধু কি-তাই খ্যাতি, সুনাম, পরিচিতির সঙ্গে রয়েছে উন্নত ক্যারিয়ার গড়ার সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি।

এ রকমই শত শত তরুণের মাঝে সফল মো. সেলিম হোসাইন। নিজেকে চ্যালেঞ্জিং পেশায় যুক্ত করতেও বিভোর ছিলেন তিনি। কোন পেশায় নিয়োজিত হলে চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করা যাবে, কলেজ জীবনে তিনি সেটাই ভাবতে লাগলেন।

বেসরকারি একটি টেলিভিশনে কর্মরত সিনিয়র এক ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় নিজেকে প্রযুক্তি খাতে যুক্ত করার চেষ্টা জাগ্রত হয় তার মনে। তিনি স্থির করেন গ্রাফিক্স ডিজাইন ও এডিটিংয়ের কাজে দক্ষতা অর্জন করবেন। শেখার আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও কোথায় গেলে এ কাজ শেখা যাবে তা জানা ছিলো না তার। হাতে-কলমে ও মান সম্পন্ন কাজ শেখার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছুটেছেন তিনি। অবশেষে ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী (সিইও) মো. মনির হোসনের সন্ধান পেয়ে তার নিকট দীক্ষা গ্রহণ শুরু করেন তিনি।

সেই শুরু যে শুরু আর থামতে হয়নি তাকে; বর্তমানে তিনি তার গুরু’র প্রতিষ্ঠান ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউটের ফ্লিম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন। তার অধীনেই বর্তমানে ক্রিয়েটিভ আইটির ফ্লিম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগে ১৫ জনের একটি দক্ষ টিম কাজ করছে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি সিএমএইচ, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের কাজ করেছে। দক্ষ মেধাবী জনশক্তি গড়ার জন্য বেশ নামঢাকও রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানের।

সম্প্রতি ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউটের কার্যালয়ে ভিডিও এডিটিংয়ে সফল এ ব্যক্তির সাথে কথা হয়; সারাদিন ডট নিউজের। সেখানেই তিনি নিজ ও প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে এসব কথা বলেন।

প্রশিক্ষণের শুরুর দিক সম্পর্কে সেলিম হোসাইন বলেন, শুরুতে আমি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ শিখি। এটি ভালোভাবে আয়ত্ব হওয়ার পর ভিডিও এডিটিংয়ে মনোযোগী হলাম। ধীরে ধীরে এ ধরনের কাজের প্রতি আমার আগ্রহ বাড়তে শুরু করল। কিছু দিন যেতে না যেতেই আমি নিজেকে প্রডাকশনের সঙ্গে যুক্ত করতে পারলাম। আমার কাজের প্রডাকশন শুরু হওয়ায় কাজের প্রতি আগ্রহ ও ভালোবাসা ক্রমেই বাড়তে শুরু করল। এর পর আমি নিজেকে পুরোপুরি প্রডাকশনের সঙ্গে যুক্ত করলাম। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং কাজ সফলভাবে করার পর কাজের প্রতি ভালোবাসা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেল।

Nagad

তরুণরা কেন এমন কাজ শিখবে?

জানতে চাইলে সেলিম হোসাইন বলেন, দেশে বর্তমানে ভিডিও এডিটিংয়ের চাহিদা বেশ। শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবীরাও চাইলে স্বল্প সময়ে অনলাইনে বা সরাসরি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবেন। প্রতি অনলাইন কোর্সে ২৫ ও অফলাইন কোর্সে ২০ জনের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। আমরা মাত্র ৩-৬ মাসের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হাতে-কলমে কাজ শিখিয়ে জব প্লেসমেন্ট দিচ্ছি। এমনো উদাহরণ রয়েছে; কাজ শিখতে শিখতেই জবের অফার। শুধু কি তাই; অনেক সময় লোক খুঁজে পাইনা। সবাই কোনও কোনও জব করে। দেশে বর্তমানে ভিডিও এডিটিংয়ের চাহিদা অনেক বেশি।

এসময় তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবীরাও চাইলে স্বল্প সময়ে অনলাইনে বা সরাসরি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবেন। প্রতি অনলাইন কোর্সে ২৫ ও অফলাইন কোর্সে ২০ জনের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। অনলাইন-অফলাইন কোনও মডিউলের চেঞ্জ নেই। আমাদের কাছেই যে শিখতে হবে এমনটা নয়; তবে আমরা প্রায় এক যুগ ধরে মার্কেটে সুনামের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।

 

প্রশিক্ষণার্থীদের যোগ্যতা;

সেলিম হোসাইন সারাদিন ডট নিউজকে বলেন, যারা প্রশিক্ষণ নিবেন তাদের একটি কম্পিউটার থাকতে হবে, বেসিক ইংরেজি জানতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক নয়; তবে জানলে সে অনেক বেশি সুবিধা পায়। সবচেয়ে বেশি যেটা দরকার হয়, প্রচণ্ড আগ্রহ থাকতে হবে। সপ্তাহে ২ দিন ২ ঘণ্টা করে ক্লাস করে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হতে পারবেন প্রশিক্ষণার্থীরা। ক্রিয়েটিভ আইটিতে এরকম অনেক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

সেলিম হোসাইন আরও জানান, ক্রিয়েটিভ আইটির ফ্লিম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে দেড় হাজারের বেশি তরুণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। জানামতে, তারা প্রত্যেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। প্রশিক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউটের নিজস্ব ওয়েবসাইট www.creativeitinstitute.com ভিজিট করতে পারেন বলেও জানান তিনি।

ভিডিও এডিটিংয়ে সুযোগ-সুবিধা;

পড়াশোনা ও অন্যান্য পেশা থেকেও ভিডিও এডিটিং পেশায় নিযুক্ত হয়ে আপনি আয়ের উৎস বাড়াতে পারেন।নিজস্ব ব্যবসা বা ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও কাজ করতে পারেন। বাংলাদেশে এখন প্রায় ২৫-২৬টি টিভি চ্যানেল রয়েছে। সবগুলো টিভি চ্যানেলেই প্রয়োজন দক্ষ ভিডিও এডিটরের। টিভি চ্যানেলগুলোতে সংবাদের পাশাপাশি অসংখ্য অনুষ্ঠান, নাটক, ম্যাগাজিন, বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়। সব অনুষ্ঠান টিভি চ্যানেল ছাড়াও প্রযোজনা সংস্থাও নির্মাণ করে থাকে। তাই ফুলটাইম-পার্টটাইম দু’ভাবেই ভিডিও এডিটর হিসেবে কাজ করা যায়।

প্রশিক্ষণের শুরুর দিক সম্পর্কে সেলিম হোসাইন বলেন, শুরুতে আমি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ শিখি। এটি ভালোভাবে আয়ত্ব হওয়ার পর ভিডিও এডিটিংয়ে মনোযোগী হলাম। ধীরে ধীরে এ ধরনের কাজের প্রতি আমার আগ্রহ বাড়তে শুরু করল। কিছু দিন যেতে না যেতেই আমি নিজেকে প্রডাকশনের সঙ্গে যুক্ত করতে পারলাম। আমার কাজের প্রডাকশন শুরু হওয়ায় কাজের প্রতি আগ্রহ ও ভালোবাসা ক্রমেই বাড়তে শুরু করল। এরপর আমি নিজেকে পুরোপুরি প্রডাকশনের সঙ্গে যুক্ত করলাম। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং কাজ সফলভাবে করার পর কাজের প্রতি ভালোবাসা আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেল।

শুধু চ্যানেলেই যদি বলি’ একটা চ্যানেলে ৫ ধরনের ক্যাটাগরিতে ভিডিও এডিটর নেয়া হয়। ভিডিও এডিটর ইনচার্জ, সিনিয়র ভিডিও এডিটর, ভিডিও এডিটর, জুনিয়র ভিডিও এডিটর। তাদের সুযোগ সুবিধাও অনেক।

ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউটের সুবিধা;

তিনি বলছিলেন, ক্রিয়েটিভ আইটি গত ১২ বছর ধরে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তথ্যপ্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ ও সেবা দিয়ে আসছে। এবার শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই পাচ্ছে আইটিতে দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ। এখান থেকে চাইলেই পেতে পারেন আন্তর্জাতিক মানের সনদ। গ্রাফিক ডিজাইন ও ওয়েব ডিজাইন, ওয়েভ ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, ইন্টেরিয়র ডিজাইন, নেটওয়াকিং, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, থ্রিডি অ্যানিমেশন, ফেসবুক মার্কেটিং, অ্যাডবি ইনডিজাইন, ইউএক্স/ইউ আই ডিজাইন, ১২ দিনে ফটোশপ, পাইথন প্রোগ্রামিং, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, সিসিএনএ, অটোক্যাড অ্যান্ড থ্রিডি ফ্লোর প্যান, রোবোটিক পিসিবি ডিজাইন-কোর্সগুলো শেখানো হয়।

রয়েছে স্কলারশিপ সুবিধধা। বিভিন্ন সিএসআর প্রোগ্রামের মাধ্যমেও প্রশিক্ষণের সুবিধা। বিনামূল্যে ভিডিও এডিটিংয়ের উপর সেমিনার হয় এখনে। অনলাইনেও গ্রুমিং করা হয়। চাকরিজীবী ও অন্যান্য দেশের সুবিধার জন্য শুক্রবার- সন্ধ্যাকালীন কোর্স চালু রয়েছে। অনলাইনে ক্লাসগুলো রাত আটটায় হয়।

প্রসঙ্গত, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট (নিমকো), ঘুরি লানিং প্রতিষ্ঠান থেকেও ভিডিও এডিটিংয়ের কোর্সগুলো করতে পারেন।

সারাদিন /৫ অক্টোবর/ এসআর